প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ৭ কার্যদিবসের মধ্যে
ঢাকা: দেশের ১ হাজার ৭৭২টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তির ইস্যুতে সাত কার্যদিবস সময় চেয়েছে সরকার। তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা এ সময়েও তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ।
তিনি বলেন, আজ আমরা ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। পথে পুলিশের বাধায় আমাদের থামতে হয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়। আমরা সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনা করতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাই।
ইলিয়াস রাজ বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘসময় আলোচনা করেছি। প্রধান উপদেষ্টার পরিচালক প্রশাসনের এডমিন প্রধান মো. নাজমুল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি (নাজমুল ইসলাম) যথেষ্ট আন্তরিক মানুষ। একসময় তিনি নিজেও একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার পরিচালক প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে সাত কার্যদিবস সময় চাওয়া হয়েছে। এই সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা আশাবাদী, সরকারের সিদ্ধান্ত আমাদের পক্ষেই হবে।
আন্দোলন ৯০ ভাগ সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর মাত্র ১০ ভাগ এগোলেই আমাদের বিজয় আসবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। সারা দেশের যেসব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখনো আমাদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেননি, আপনাদের দ্রুত অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। যদি আপনারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করেন তাহলে আপনাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেই আমাদের সংগ্রাম এগিয়ে চলবে। প্রজ্ঞাপন না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় যায়। বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মুখ্য সমন্বয়ক গাউসুল আজম শীমু, সাধারণ সম্পাদক মোছা. রিমা খাতুন, সমন্বয়ক এম এ সালাম, মো. আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসাইন এবং জীবন কৃষ্ণ দেবনাথ।
তার আগে দুপুর ১টার দিকে যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করার সময় পুলিশ কদম ফোয়ারায় ব্যারিকেড দেয়। পরে শিক্ষকরা রাস্তা বন্ধ করে বসে পড়েন। এসময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। প্রায় ৪০ মিনিট পর তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকরা দাবি করেন, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তাদের তিনজন শিক্ষক গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শিক্ষকদের ৫ দাবি হলো— ১. অনতিবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তি সুনিশ্চিত করতে হবে; ২. সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী বান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; ৩. বিশেষ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ৩ হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে; ৪. শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ উচ্চ উপকরণ, খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করতে হবে; ৫. ছাত্রছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করতে হবে এবং সব চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নির্ধারিত কোটা সুনিশ্চিত করতে হবে।
    




























