
গণমানুষের সাহসী কণ্ঠস্বর সাংবাদিক শফিকের জন্মদিন আজ
ডেস্ক : আজ ১৭ জুলাই, বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক সাহসী ও আপসহীন কণ্ঠস্বর হাফিজুর রহমান শফিক–এর জন্মদিন। সাংবাদিকতার পেশাগত শুদ্ধতা, রাজনৈতিক সচেতনতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থানের কারণে তিনি নিজেকে তুলে ধরেছেন একজন সত্যিকারের গণমাধ্যমযোদ্ধা হিসেবে। বর্তমান সময়ে সকল অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত সাহসী ও সরব উপস্থিতি সচেতন মহলে বেশ প্রশংসিত।
প্রচলিত সাংবাদিকতার সীমানা পেরিয়ে হাফিজুর রহমান শফিক দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রের ক্ষমতাধর ও দুর্নীতিপরায়ণ গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচনে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছেন। সাংবাদিকতায় তিনি শুধু তথ্য বহনকারী নন—তিনি জনগণের প্রতিনিধি, প্রশ্নের মুখোমুখি করানোর এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।
রাজনৈতিক অবস্থান ও আদর্শিক অবস্থান:
জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী শফিক সবসময়ই গণতন্ত্র, মুক্তচিন্তা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে অবিচল থেকেছেন। স্বৈরাচার বা একদলীয় দমননীতির বিরুদ্ধে তাঁর কণ্ঠ কখনও কাঁপেনি। বরং রাজনৈতিকভাবে অস্থির সময়ে তিনি বারবার সাধারণ মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়ে অন্যায়, নিপীড়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমস্ত অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে সক্রিয়।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দিগন্ত উন্মোচন:
সাংবাদিক হাফিজুর রহমান শফিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও সাহসী কাজগুলোর একটি ছিল ২০২৪ সালে “ছাগল কাণ্ডে” এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, অর্থপাচার এবং বিলাসী জীবন সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রথম অনুসন্ধানী সংবাদ প্রচার করেন তিনি।
মতিউরের অনুসন্ধানী সংবাদ প্রচারের পর রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক ব্যাপক হয়রানির শিকার হয়েছিলেন হাফিজুর রহমান শফিক এবং তার পরিবার।
এই প্রতিবেদন দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং মূলধারার গণমাধ্যম ও দুর্নীতি দমন কমিশন পরে তা অনুসরণে বাধ্য হয়। তিনি মতিউর রহমানের পরিবারের অর্থনৈতিক অসঙ্গতি, পুত্রের ব্যাংক হিসাব, বিদেশে বাড়ি, বিলাসবহুল জীবন যাপনের তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরেন, যার সূত্র ধরে দেশজুড়ে নৈতিক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
এটিই ছিল দেশের সাংবাদিকতায় নাগরিক জবাবদিহিতার বাস্তব প্রয়োগ এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নিরঙ্কুশ ব্যবহারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সাহসী দৃষ্টান্ত।
স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে অগ্রণী:
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও হাফিজুর রহমান শফিক সরব ছিলেন রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ভোটাধিকার হরণ, বিরোধী নেতাকর্মীদের দমন ইত্যাদি ইস্যুতে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন নেতা ও সরকারি আমলাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের ফলে তিনি রাজনৈতিক হামলা- মামলা সহ ব্যাপক হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি হুমকি, নজরদারি ও নজরদারি বাহিনী দ্বারা হয়রানি—এসবই মোকাবিলা করেছেন আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সঙ্গে।
পরিবার ও ব্যক্তিজীবন:
হাফিজুর রহমান শফিকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার এক শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক পরিবারে। তাঁর পিতা ছিলেন সাবেক বিডিআর (বর্তমান বিজিবি)–এর নায়েক সুবেদার, একজন দেশসেবক এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাহিনীর সম্মানিত সদস্য। তার মা মৃত হোসনেরা বেগম ছিলেন ধর্মপ্রাণ ও নৈতিক শিক্ষায় দৃঢ় একজন গৃহিণী, যিনি পরিবারে আদর্শচর্চার উৎস হিসেবে কাজ করেছেন।
পারিবারিক ঐতিহ্য এবং সেনা-শৃঙ্খলার শিক্ষা থেকেই শফিক গড়ে তুলেছেন এক দৃঢ়, সৎ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব।
তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা:
সাংবাদিক হাফিজুর রহমান শফিক শুধু একজন সাংবাদিক নন, তিনি একটি আদর্শ। তরুণ সাংবাদিকদের নৈতিকতা, অনুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি ও সাংবাদিকতায় দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে তিনি বরাবরই উৎসাহ দিয়ে আসছেন।
তাঁর লেখনী ও রিপোর্ট সাংবাদিকতাকে খবর প্রকাশের বাইরে নিয়ে গিয়ে জবাবদিহিতা ও রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
জন্মদিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা:
আজকের এই বিশেষ দিনে সকল গণতন্ত্রপ্রেমী, পাঠক, সহকর্মী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অনুরাগীরা সাংবাদিক হাফিজুর রহমান শফিকের জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। আপনার এই সাহসী কণ্ঠস্বর আরও শক্তিশালী হোক, কলম হোক সত্যের অস্ত্র, আর সাংবাদিকতা হোক গণমানুষের মুক্তির পথরেখা।
“শুভ জন্মদিন হাফিজুর রহমান শফিক” আপনি সত্যের পক্ষে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন আমাদের সাহস হয়ে।