• ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার রাত ৩:৫৭
S M Tajul Islam জুন ১২, ২০২৫

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সুলতান-সোহাগ সিন্ডিকেট অনিয়ম-দুর্নীতিতে বেপরোয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) উপ-মহাসচিব সুলতান আহমেদ ও চেয়ারম্যানের পিএস সোহাগ মিয়ার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের স্বেচ্ছাচারিতায় অস্থিতরতা বিরাজ করছে। এই সিন্ডিকেট নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতি ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্যসহ অনিয়ম-দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি বিগত ও আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত করা হচ্ছে সংস্থাটি। আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও এখানে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যানকে কব্জা করে সুলতান-সোহাগ সিন্ডিকেট ফায়দা লুটছে। বদলির অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ, ও পদোন্নতির মতো সংবেদনশীল বিষয়ে গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই একতরফা সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এমনকি বিডিআরসিএস বর্তমান চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলামকে অন্ধকারে রেখে সিন্ডিকেট তাদের অপকর্ম হাসিল করছে। এঘটনায় সংস্থার প্রশাসনিক কাঠামোতে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিগত দিনে বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। লিখিত অভিযোগ ও বিভিন্ন নথিপত্র ঘেঁটে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বিগত ১৬ বছরে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণের ফলে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব গতিপথ হারিয়েছে, যার কফিনে শেষ পেরেগ মেরেছেন অবৈধ ভাবে আওয়ামী লীগের আদর্শ বাস্তবায়নে যাকে উপ মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সেই দুর্নীতিবাজ পরিচালক সুলতান। যার কাজই ছিল আওয়ামী লীগ দলীয় ক্যাডারদের চাকরি প্রধান, চাকরি স্থায়ী করণ, পদোন্নতি প্রধান এবং বিরোধী মতাবলম্বী দের ধ্বংস করা। যার প্রমাণ রেডক্রিসেন্টে তার কর্মকাণ্ডের নথি দেখলেই সততা মিলবে। সুলতানের সহযোগি হুমায়ুন মিলেমিশে বিগত চেয়ারম্যান এর নির্দেশে কম পক্ষে হলিফ্যামিলি হাসপাতালে এবং রেড ক্রিসেন্টে আওয়ামীপন্থী ১০০ জন লোককে সকল নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে চাকরি প্রদান, পদোন্নতী এবং স্থায়ীকরণ করেছেন। অন্যদিকে সোসাইটির জন্য যারা নিবেদিত তাদের বিরুদ্ধে চালিয়েছেন স্টিম রোলার। বিভিন্ন সময় যার প্রেক্ষিতে সোসাইটির প্রায় সকল কমকর্তা কমচারীরা বিশেষ করে পরিচালক তার অপসারণের জন্য দাবি উত্থাপিতকরলেও অজানা শক্তির কারণে তিনি প্রতিবারই পার পেয়ে যাচ্ছেন। তার অন্যতম সহযোগী বর্তমান চেয়ারম্যানের পিএস সোহাগ মিয়া এবং সব আওয়ামী সমর্থকরা বিরোধীর দমন করার এক ভয়াবহ মিশনে নেমেছে এমন তথ্য এসেছে সংবাদিকদের কাছে।

২০২২ সালে-গ্রিপ নামক একটি প্রকল্পে এক নিয়োগ পরিক্ষায় সাজিয়ে ছিলেন এক লোমহর্ষক নাটক, তার পিএ ইলিয়াস, পার্সনাল দফতরের মইন ও চাকরিচ্যুত আহমেদকে নিয়ে একটা মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সোসাইটির একজন ত্যাগি ভিন্নমতালম্বীকে ফাসিয়ে দেয়া এবং চাকরিচ্যুত করার সকল প্রক্রিয়াই চূড়ান্ত করেছিলেন ততকালীন বোর্ড মেম্বর আওয়ামী ক্যডার শাহীন ও টুকুকে দিয়ে। যা হস্তগত তদন্ত রিপোর্টে সম্পূর্ণটাই উঠে এসেছে। এখন পরিস্কার যা থেকে বোঝা যায় এই আওয়ামী ডেভিল সোসাইটি ধ্বংসকারীকে আইনের আওতায় এনে সোসাইটির গৌরব ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা ছাড়া সোসাইটির ঐতিহ্য ফিরানো আর সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। এখানেও নানা দুর্নীতিতে নিষ্পত্তি করেছেন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরা। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক সুলতান আহম্মেদ এক সময়ে আ’লীগের হয়ে নানা অনিয়ম করেছেন।

সূত্র জানায়, পরিচালক সুলতান আহম্মেদের সহযোগী হুমায়ুন আহম্মেদ মিলেমিশে বিগত চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে আওয়ামী পন্থী প্রায় শতাধিক লোককে নিয়োগ ও পদোন্নতি দিয়েছেন।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠানটি কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণে দিন দিন তার সুনাম হারিয়ে ফেলছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরা এখনও বহাল তবিয়াতে থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দার প্রান্তে নিয়ে এসেছে। দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ করে অবৈধভাবে প্রায় শতাধিক লোককে নিয়োগ দিয়েছেন। আবার এর বিনিময়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এই দোসরাই এখনও পুরো প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করছেন।

আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ রোড ক্রিসেস্ট সোসাইটির প্রধান কার্যালয় মগবাজারস্থ এলাকায় অবস্থিত। তার এই সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছেন শত কোটি টাকা। এই দোসরাই এখন ভোল্ট পাল্টিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হয়েছেন।

পরিচালক সুলতান আহম্মেদের একক আদিপত্যের কারণে তৎকালীন ভিন্নমতাবলম্বীদের কোণঠাসা করে রেখেছেন। এ ব্যাপারে পরিচালক সুলতান আহম্মেদের সাথে এ প্রতিবেদক যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *