Note : জরিপের ফলাফল দেখতে ভোট দিন
25-04-2023 | 04:36 pm
মুক্তচিন্তা
মুসলিমসহ অন্যান্য ধর্মের-ধার্মিক-ঈমানদার- মানবতাবাদী-বিবেক-বিবেচনা-মায়া-মমতা এবং সুন্দর মানসিকতা সম্পূর্ণ ও সু-শিক্ষিত মানুষের মাঝে কি কি গুণাবলী থাকা দরকার।মুসলিম হলে প্রথমত আল কুরআন সর্বশ্রেষ্ঠ সংবিধান যে,সংবিধান মহান আল্লাহপাক কর্তৃক রচিত এবং হযরত জিবরাঈল আসাল্লামের মাধ্যমে ধাপে-ধাপে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর নূরের হাতে প্রেরিত ও তাঁর মাধ্যমে সেই আল-কুরআনের আলো দুনিয়ার বুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ কালেমার দখলে গিয়ে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং আল কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন,যা মূল শিক্ষা।সেই ক্ষেত্রে মুসলমানদের দায়িত্ব কি হবে!মুসলমানদের বড় দায়িত্ব হবে শ্রেষ্ঠ ধর্মের কর্ম অনুযায়ী কর্ম করে শ্রেষ্ঠ ধর্মের ও মুসলমানের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে যে,মুসলিম ধর্ম আসলেই ভালো ধর্ম । আর এ দায়িত্বগুলো মুসলমানদেরকেই বেশি করে পালন করতে হবে। মানুষের প্রতি দরদ-মায়া-মমতা ও মানবতা দেখানোর ক্ষেত্রে মুসলমানদেরকে সেই কাজগুলো করে দেখাতে হবে,যাহাতে ঈমানদার ও মানবতাবাদী মানুষ হিসাবে মানুষের কাছে গন্য হওয়া যায়।সেই মুসলমান হিসেবে গন্য হওয়ার লক্ষ্যে যেকোনো কাজ করার পূর্বে একবার নয়,একাধিকবার বিবেকের বিবেচনায় বিচার করে কাজে হাত দিতে হবে এবং বাস্তবায়নের পথে প্রবেশ করতে হবে,যাহাতে কোন ধর্মের মানুষের ক্ষতি না হয়।মুসলমানদেরকে সেদিকে বেশি করে লক্ষ্য রাখতে হবে।তাই মানুষকে মায়া-মমতার চাদরে পেচিয়ে বুকে নিতে হবে।দেখুন-ধর্ম এক পাশে রেখেও যদি হিসাব করি,তাহলেও আমরা মানুষ। আর মানুষ হিসেবেও মানুষের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও বদ্ধতা রয়েছে প্রচুর। অন্যদিকে ক্ষতিকর মানুষের হাতে কোন মানুষের প্রাণ না যায়,ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,সেদিকেও মুসলমানদেরকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।একজন মুসলমানের অর্থ-সম্পদ পাহাড় পরিমাণ থাকবে এবং ভোগ করার কেউ থাকবে না,কিন্তু সে অসহায় কোন মুসলমানের বা অন্য কোন ধর্মের অসহায় মানুষের কাজে আসবে না।সেই ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ মুসলমান-ঈমানদার-বিবেক বিবেচনা মায়া-মমতা ও মানবতাবাদী এবং মনুষ্যত্ব সম্পূর্ণ মানুষ,সেই মুসলমানকে বা অন্য কোন ধর্মের মানুষকে মানুষ বলা যাবে না।মুসলমানের দাবি করলে করতেই পারি।তবে কাজ করা ছাড়া মুসলমান দাবি করা পরিপূর্ণ হবেনা,সে বিষয়গুলোও গুরুত্ব সহকারে আমলে নিতে হবে।আমি ঈদ উৎসবের আনন্দ ভোগ করলাম দেশি-বিদেশি হাঁস-মুরগি-পাখির গোস্ত ভোগ করার মাধ্যমে এবং সেমাই ও ফল খেয়ে।অথচ আমি কথার কথায় বলে বেড়ালাম-আমার পাশে একজন মুসলমান না খেয়ে থাকলে,আমার মুসলমানিত্ব পরিপূর্ণ হবে না। আমার কথার সাথে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের সাথে কি মিল আছে কি মিল নেই,সে হিসেবের কাজ আমি করলাম না,শুধু কথাই বলে গেলাম।কিন্ত কারো কথা শুনলামনা ও মানুষের সমস্যা বুঝলামনা এবং সহায়তা করলামনা।দাবি করলেই কি মুসলমান হওয়া যায়,সে হিসাব মাথায় রেখে কাজ করলাম কি করলামনা না,সে হিসেব অবশ্যই করতে হবে।শুধু মুসলমান নয়,যেকোনো একটি ধর্মের মানুষ যদি সমস্যায় পড়ে আমার বা আপনার কাছে এসে দাঁড়ায়। তখন আমার ও আপনার দায়িত্ব হবে ধৈর্য সহকারে তার কথাগুলো শুনে সম্ভাব্য সহযোগিতা করে উপকৃত করার পথ খুঁজে বের করা,যা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্যের অংশ মনে করতে হবে।আর এ বিষয়গুলো চিন্তা এবং ভাবনার ও পরিকল্পনার খোরাক হওয়া উচিত বলে বিশ্বাস করতে হবে।আমি অনেক অর্থ-সম্পদশালী মুসলমান।আমি মানুষের সুপারিশের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সামর্থ্যবান অনেক মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা ব্যয় করে হজ্ব করার জন্য পাঠিয়ে বা অন্য কোনভাবে সহযোগীতা করে থাকি।আমি বাস্তবে যাচাই-বাছাই করে দেখি না,যাকে হজ্বে পাঠাচ্ছি বা অন্য কোনভাবে সহযোগীতা করছি,বাস্তবে যাকে হজ্বে পাঠানো দরকার,সহযোগীতা করা দরকার,তাকে বঞ্চিত করছি কিনা,তাও চিন্তা করতে হবে।কোন কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে জাতির তথা সরকারের অর্থ ব্যয় করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এক ব্যক্তিকে একাধিকবার হজে পাঠানো হয় এবং এর বিনিময় সহায়তাকারীরা অর্থ পায়।একি অন্যায় নয়?একি বৈষম্যতা নয়?এতে কি পরিপূর্ণ মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব পালন করা হয়?মুসলমানদের কাজ হওয়া উচিত ইসলামের দৃষ্টিতে সভ্য এবং সামাজিক ও আল-কুরআনের আলোকে শিক্ষনীয়। যা দেখে অন্যান্য ধর্মের মানুষজনও ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়।যেহেতু পাক কালেমা পড়ে মুসলমান হয়েছি,সেহেতু অবশ্যই ধর্ম এবং মানুষের ভিতরে শ্রেষ্ঠ মানুষ মুসলমান।সুতরাং সেই হিসেবে কাজের গুনাবলী ভালো হলেই ভালো হয়।অনেক মুসলমান আছেন বিশ্বের বিভিন্ন আদালতে বিচারকের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসলে থেকে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদেরকে অবশ্যই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করার এবং মানব কল্যাণে অবদান রাখার প্রয়োজনে। সেই মোতাবেক বিচারকের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। যেই মোতাবেক দায়িত্ব পালন করলে আমাদের মুসলমানের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা বেড়ে যায়।তাই কাগজাদি ও তথ্যাদি যাচাই-বাছাই পূর্বক সর্বপ্রকার স্বার্থের ঊর্ধে উঠে বিচারকার্য সম্পাদন করতে হবে। অন্যান্য যে সমস্ত ধর্মের মানুষ রয়েছেন।তাদেরকেও তাদের ধর্মগ্রন্থের আলোকে বেছে-বেছে ভালো কাজগুলো করার চেষ্টার প্রয়োজন আছে।যেহেতু সকল ধর্মেই ভালো বিষয়াদির স্থান রয়েছে,সেহেতু ভালো বিষয়াদি বেছে বেছে মঙ্গলজনক কাজগুলি করতে হবে।ধর্মগ্রন্থের আলোকে ভালো কথাগুলো প্রচার করলেই হবে না।কর্মের মাধ্যমে ভালো কর্মের প্রচারও করতে হবে। তাছাড়া ভালো কর্মের শিক্ষা মানুষ কিভাবে পাবেন? সে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে,যাহাতে ধর্মের আলোকে কাজের মান বজায় থাকে। ধর্মীয় চেতনার আলোকে সঠিক কাজ করলে-সকল ধর্মের মানুষ কম-বেশি উপকৃত হবে এবং কল্যাণ বয়ে আসবে। প্রয়োজন কথার ফুলজুড়ি না সাজিয়ে,কাজের ফুলজুরি সাজানো।
লেখক-সাংবাদিক,গবেষক ও কলামিষ্ট।