Note : জরিপের ফলাফল দেখতে ভোট দিন
10-04-2023 | 12:44 pm
মুক্তচিন্তা
ঢাকা: স্বাধীন বাংলাদেশের প্রায় সকল গ্রামের অনেক পরিবার নিজ জন্মভূমি ছেড়ে এবং জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্থানে-স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।যাহারা দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে চাকরি বা ব্যবসা-বানিজ্য করেন,তাই বলে কি তাদের সম্পত্তি বে-দখল হয়ে যাবে? দেখুন-দেশের শহর ও গ্রামে কিছু সংখ্যক কুচক্রি মহলের সদস্য-সদস্যার,পরিবার-পরিজন আছে,যারা সমন্বয়ের ভিত্তিতে-কারো খালী বাড়ি,ঘর-জায়গা,জমি ভুয়া দলিল ও অবৈধ রেকর্ড করে বা গায়ের জোরে কেউ দখল করে নিয়ে মালিক সেজে বসে আছে। বাড়ি-ঘর,জায়গা-জমির প্রকৃত মালিক দখলে যেতে পারেন না,যা যথাযথভাবে আইন প্রয়োগ ও দৃষ্টান্তমুলক বিচার না করার ব্যর্থতা।দেশের কোন কোন এলাকার চেয়ারম্যান-কমিশনার,মেম্বারসহ অনেক সমাজপতি আছে,যাদের প্রকাশ্যের ও নেপথ্যের সহযোগিতা পেয়ে অপরাধীরা অপরাধ করেই যাচ্ছে।দেশের যেসকল স্থানে বা এলাকায় ভালো চেয়ারম্যান-কমিশনার,মেম্বার ও সমাজপতি আছেন এবং ভালো কাজ করতে চান। তারা আজকাল সেই অচল টাকা-পয়সার মত হয়ে গেছে এবং তাদেরকে সেই সমাজ খাচ্ছেনা,যেই সমাজ হিসাবের সমাজ না,কিন্তু্ু তার পরেও ভালো মানুষ সামনে আসছেন না ।সমাজে ভালো মানুষ নেতৃত্বে নিয়ে আসতে ও জাতিকে ভালো ফসল দিতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে হবে।যেমন-সমাজের-প্রশাসনের ও আইনের কাছে যারা বাস্তবেই দাগি-অপরাধী এবং সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।এরকম কোন ব্যক্তিকে নেতৃত্বের আসনে বা রাজনীতিতে নেওয়া যাবে না এবং ভালো মানুষকে কখনোই অবমূল্যায়ন করে দূরে সরিয়ে রাখা ঠিক হবে না। পেশাদার খারাপদেরকে মানুষ কেন,মানুষ মনে করেনা এবং জীব-জানোয়ারের চেয়েও চরম ঘৃনা করে,তা কেন,এ বিষয় যেন ওরা বুঝতে পারে ও ভালো পথে ফিরে আসার চেষ্টা করে।সেই ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয়কেও গুরুত্ব দেওয়া যাবেনা।অন্তত জাতীয় স্বার্থের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে কিছু কিছু শক্ত ও সাহসি কাজ করা দরকার আছে।অন্যদিকে গুরুত্ব দিতে হবে ভালো মানুষের ভালো কাজগুলোকে,যাহাতে ওরাও ভালো পথে চলে আসে এবং ভালো মানুষের দাম ছিল,আছে বুঝতে পারে। রাজনৈতিক দলে ও প্রশাসনে এবং সমাজে সেই মোতাবেক পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।যাহাতে ঠকবাজ ও ধোকাবাজদের অস্তিত্ব সমাজে না থাকে।দেশের অনেক জায়গার প্রকৃত মালিক যখন বাড়ি-ঘরে থাকেননা,তখন কেউ-কেউ খালী বাড়ি-জায়গা-জমিন পেয়ে ভুয়া দলিল বানিয়ে ও রেকর্ড সহ নামজারি করে মাঠে নেমে আসে এবং কেউ কারো জমি-জায়গার মালিক হয়ে বসে আছে।ওরা কারা সেই পরিচয় নিয়ে,ওদের দ্বারা সেই রেকর্ড পুনরায় ভেঙ্গে ফেলে দেওয়াতে হবে এবং দখল করে নেওয়া জায়গা-জমি উদ্ধারের জন্য ভুক্তভোগীরা কোন দায়িত্ব পালন করতে পারবেননা। ভূক্তভোগীরা যাহাতে আর হয়রানীর শিকার না হয় এবং টাকা ব্যয় না হয় ও অপরাধীরা শিক্ষা পায়।সেইজন্যই ভূমি অফিসের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী-তহশিলদার,এলাকার চেয়ারম্যান- কমিশনার,মেম্বার,দফাদার-চৌকিদার,দালাল ও চামচাদের কাছে দৌড়ানোর দায়িত্ব প্রতারকদের উপরেই বর্তাতে হবে।অন্যায় ও অপরাধ করেছে ওরা।সুতরাং খেশারত ওদেরকেই দিতে হবে,যাহাতে শিক্ষা পায়।ওদের কর্মকাণ্ডের ফলে অনেক নিরীহ পরিবার-পরিজন,সদস্য-সদস্যাদেরকে ঘাটে-ঘাটে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে,টাকা দিতে হয়েছে এবং বছরের পর বছর ধরে দৌড়াতে ও ঘুরতে হয়েছে। এইসব জাল-জালিয়াতির সাথে বেশিভাগ জড়িত হচ্ছে,ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আইনের আলোকে সঠিকভাবে বিচার না হওয়ায়,অপরাধ এবং অপরাধীর সংখ্যা বেড়ে যায়।মাঝখানে নিরীহ মানুষ নির্যাতনের শিকার হয় এবং অযথা টাকা ব্যয় হয়।ভূক্তভোগীদের দোষ কোথায়!ত্যাগ স্বীকার করে আইনের সিঁড়ি যদি একবার উপরে তুলে দেওয়া যায়। তবে সে সিঁড়ি বেয়ে মানুষ পার হতে পারবে,উপকৃত হবে এবং তাতে সরকার-প্রশাসন,স্থানীয় কমিশনার-চেয়ারম্যান ও মেম্বারের তথা সমাজপতিদের মান কখনো প্রশ্নবিদ্ধ হবে না,বরং প্রশ্নমুক্ত থাকবে এবং সুনাম শানিত হবে।কুচক্রী মহলের অনেকে-অনেক অপরাধ করেও পার হয়ে যায়,শুধু রাজনৈতিক পরিচিতির কারণে এবং ঘরের ছেলে দাবী করার ফলে তারা ক্ষমা পায়।এই বৈষম্যবাদী পথ বন্ধ না করলে অনেক অপরাধীই ক্ষমার আওতায় যেতে চাইবে।যার ভবিষ্যৎ খারাপ প্রভাব সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দলের ও সমাজের নিরীহ মানুষের উপরে পড়বে।স্বাধীন বাংলাদেশকে মনে করতে হবে একটি ঘর-একটি সংসার।এই ঘরের ভিতরে বিভিন্ন ধর্মের নারী ও পুরুষ এবং শিশুরা বসবাস করেন।সরকারের ক্ষমতায় যেই দল বা সরকার থাকুক না কেন,সেই সরকার হচ্ছে,ঘরের ও বিশাল সংসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি। এই ঘরের ভিতরে যারা আছেন তারা সকলে একই পরিবারের সন্তান।সুতরাং বৈষম্যহীনতার আলোকে সকলের বিচার হওয়া এবং দরকারে যথাযথ কর্তব্য পালন করা এবং যারা হক পথে সহযোগিতা পেতে পারে।তাদেরকে সহযোগিতা করে উপকারভোগী করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের। সরকারের ভিতরে এবং বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দলের ভিতরে ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে লুকিয়ে থাকে কিছু সংখ্যক সুবিধাবাদী। তারা সবুজ রংয়ের সাথে সবুজ রং ধারণ করে এবং সুবিধাভোগী হয়।দেশ ও জাতির এবং সমাজ উন্নয়নের স্বার্থে শহরে এবং গ্রামের ঐ সমস্ত কুছক্রিদেরকে বেছে-বেছে আইনের আওতায় নেওয়া ও বিচার করা উচিত। তাহলে দেখবেন সমাজে অনেক শান্তি বয়ে এসেছে এবং আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে প্রবেশ করবে,যার ভবিষ্যৎ ফল খুবই মঙ্গলজনক হবে,কিন্ত কষ্ট ও ত্যাগের মাধ্যমে সেই পথ সৃষ্টি করতে হবে।অন্যের জমি যাহারা অবৈধ দলিল পত্রের মাধ্যমে দখল করেছে। তাদেরকেই রেকর্ড ভেঙ্গে যার-যার জমি তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে দলিলের মাধ্যম এবং যাবতীয় ব্যয় বহন করতে হবে। ভুক্তভোগীদেরকে নিরাপদে রেখে উপকৃত করার পথ দেখাতে হবে।এই ধরনের আইন প্রয়োগ করলে অপরাধ করার আগে অনেকেই চিন্তা-ভাবনা করবেন এবং অপরাধ ছেড়ে দিবেন।যদি কেউ অপকর্ম করার ক্ষেত্রে আশ্রয়-প্রশ্রয় না পায়।গ্রামে যারা স্থায়ীভাবে বসবাস করে,তাদের মাঝে এমন কিছু হীন-নীতি-লোভী ও জগঘন্য চরিত্রের মানুষ আছে,যাহারা রক্তের আপনজনদেরকেও আলাদা গোত্রের মানুষ মনে করে।যাহারা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না,তাদেরকে আলাদা গোত্রের মানুষ মনে করে গ্রামের কুচক্রী ও প্রতারক মহলের মানুষ।তাতে যদি কেউ রক্তের আপন ভাইও হয়। কেউ শহর থেকে অনেকদিন পরে নিজ জন্মভূমি গ্রামে গিয়ে-গ্রামের নারী,পুরুষ-ছেলে,মেয়েদের চরিত্র-নীতি-আদর্শ এবং কে কেমন ষড়যন্ত্র করতে পারে,সে বিষয় সহজে কিছুই খুঁজে পাবে না।নতুন-নতুন কয়েকদিন তাদের ব্যবহার দেখে মনে হবে ফেরেশতা।ওরা যে বড় শয়তান,তা বুঝতে একটু সময় লাগবে এবং ক্ষতির শিকার মেনে নিতে হবে।যাই হোক তারা সেইসব ব্যক্তিকে ঠকানোর ও সম্পত্তি গ্রাস করার চেষ্টা করে,যেইসব ব্যক্তিরা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না এবং কেউ-কেউ গ্রামে গিয়ে বসবাস করতে চাইলেও ঐসব জঘন্য চরিত্রের মানুষগুলোর জন্য গ্রামে গিয়েও বসবাস করতে চান না আবার কেউ-কেউ অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিয়েই বসবাস করতে চান।গ্রামের ভালো মানুষগুলো ন্যায়ের পক্ষেও দাঁড়াতে পারেন না,ঐ কুচক্রী মহলের হাতে অপমান-অপদস্ত হতে পারে ভেবে।দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাস্তবে আমাদের নীতি ও আদর্শের পতন হয়েছে। বিবেক-বিবেচনা-বুদ্ধি এবং ঈমানী শক্তি কাজ করেনা। স্বাধীনতা বলতে আমরা অনেকেই বুঝি কারো সম্পত্তি গায়ের জোরে দখল করে নেওয়া-ভুয়া রেকর্ড, জাল-জালিয়াতির দলিল করে মালিক হওয়া।এসব করে তো অনেকেই নিরাপদে আছে। তাই অনেকেই এ সমস্ত অপকর্ম থেকে পিছিয়ে থাকছে না। এর মূল কারণে রয়েছে রাষ্ট্রের উদ্যোগে স্বচ্ছতার আলোকে কঠিন হস্তে কোন আইন বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি না হওয়া এবং সীমাহীন টাকা ও সম্পদ লোভী হওয়া।যেই সরকার কঠিন হস্তে আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করতে না পারবেন। সেই সরকার দেশ ও জাতিকে ভালো ফসল দিতে পারবেননা,তাতে ভালো ইচ্ছা যতো বড় বিশাল আকারের ও পরিকল্পনা যতো বড় মহৎ থাকুকনা কেন। মহান নেতা এবং বাংলার বন্ধু-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ জাতীয় ত্যাগী পূর্বসূরী অনেকের স্বপ্ন ও আশা ছিল মহান স্বাধীনতা অর্জন করার পরে উপরোক্ত অপরাধীরা সমাজে থাকবে না এবং তাদেরকে যেভাবেই হোক ভালো পথে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং শান্তি প্রিয় মানুষদেরকে ভালো পথেই ধাবিত রাখতে হবে।তাদের দ্বারা ভালো মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। যার-যার জায়গা-জমি-বাড়ি-ঘর যেখানে আছে,সেখানে পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে এবং কেউ-কারো জায়গা,জমির উপরে হাত দিতে পারবেনা,দখলে নিতে পারবেনা। কিন্ত লক্ষ্য করা যায়-কেউ অন্যায় ও অবৈধভাবে কারো জায়গা-জমি,বাড়ি-ঘর দখল করে নিয়ে যাচ্ছে।এখন প্রশ্ন হল কেন এই সাহস পাবে,নিরীহ মানুষ কেন হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শিকার হবে? সেই সাহস যাহাতে না পায় এবং কেউ উৎসাহ না দেয়। সেই প্রকারের এবং সময়োপযোগি কঠিন আইন প্রয়োগ করা উচিত।রোগীর যেমন রোগ ও ব্যাধী ঠিক তেমন ঔষধ যদি না দেওয়া হয়,তবে কি রোগ-ব্যাধী ভালো হবে নাকি?তাইতো উন্নয়নের স্বার্থে ও জাতির প্রয়োজনের তাগিদে সামনে নিয়ে আসতে হবে নতুন আইন-কানুন এবং নিয়ম-নীতি।যার মাঝে অবশ্যই শতভাগ কল্যাণ নিহীত থাকবে।তাছাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যান- কমিশনার,মেম্বার-সচিব,দাফাদার-চৌকিদার নিরপেক্ষতার আলোকে কাউকে উপকৃত করতে পারবেনা এবং সরাসরিভাবে কারো পাশেও দাড়াতে পারবেনা।দাঁড়ানোর সুযোগ সরকারকেই সৃষ্টি করতে হবে।যেহেতু বাদী ও বিবাদী দুজনেই তার ভোটার ও এলাকায়।সুতরাং যারা মন রক্ষা করে চলবে তারা এবং দখলদার গং নীতিগতভাবে সঠিক দায়িত্ব কোনদিনই পালন করে যথাযথ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপকার করার সুযোগ পাবেনা।ওদের অনেকের মগজের ভিতরে পয়দা হয়েছে ঘৃনিত হীন মানসিকতা।থানা ও পুলিশ প্রশাসন হচ্ছে,আইন-আদালত-কোটকাচারীর আংশিক কাজ বাস্তবায়ন করার স্থান।অনেক ভূক্তভোগী পরিবার-সদস্য-সদস্যাগন পুলিশের কাছে বিভিন্ন প্রকারের আবেদন-নিবেদন ও অভিযোগ করেই থাকে। মানুষের কাগজাদি যাচাই বাচাই করে এবং ভালো করে দেখে খুব স্বল্প সময়ের ভিতরে যে কোন সমস্যার সমাধান থানায় বসেই করে দিতে পারেন। এছাড়াও ভুক্তভোগীদের বাড়িতে গিয়েও সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান করে দিতে পারেন।প্রয়োজন হচ্ছে- নিরপেক্ষতার আলোকে যে কাজ করা প্রয়োজন সে কাজ বাস্তবায়ন করার স্বার্থে রাষ্ট্র কর্তৃক সে সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।আশা করি জাতীয় স্বার্থে সরকার সে সুযোগ সৃষ্টি করে দিবেন এবং পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী জনস্বার্থে কর্তব্যগুলো পালন করে সেবার উন্নয়ন ঘটাবেন।এর ফলে মানুষ সহজে সেবা পেয়ে উপকৃত হবেন এবং পুলিশের সুনাম বৃদ্ধি পাবে।বিশ্বাস করি পুলিশের পক্ষ থেকে সেরকম মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।বিষয়গুলো জাতীয় উন্নয়নের বাহিরে নয়।
লেখক-সাংবাদিক,গবেষক ও কলামিষ্ট।