Note : জরিপের ফলাফল দেখতে ভোট দিন
09-06-2022 | 12:45 am
বিশেষ প্রতিবেদন
ঢাকা: সরকারের অনুমোদনহীন অবৈধ ক্যানকো কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা দাবিদার ও ব্লু ব্রিকস হোম ডেভলপার কোম্পানির মালিক মোঃ এহতেশাম মাতব্বর, মোঃ নূরে আলম মাতব্বর, মোঃ আসাদুজ্জামান মাতব্বরকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করে গেন্ডারিয়া থানা। মহামান্য আদালতে তাদের মামলার রিমান্ড শুনানির তারিখ ৯ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
৬ জুন ২০২২ রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া থানায় ১১০ দীন নাথ সেন রোডের মৃত টুকু মিয়ার মেয়ে শাহানাজ বেগমের ৪০৬/৪২০ ও ৫০৬ ধারায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গেন্ডারিয়া থানা এই আসামিদের গ্রেফতার করে।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকার ১১০ নং দীননাথ সেন রোডের টুকু মিয়ার মেয়ে শাহনাজ বেগম, সুলতানা বেগম ও ছেলে সদ্য প্রয়াত মুজিবুর রহমান, আপন খালাতো ভাইদের অভিনব প্রতারণায় প্রতারিত।
নিজের একমাত্র বসতবাড়ি আপন ভাইয়ের অংশ বিক্রি করবেন, কেনার মতো সামর্থ্য ছিলো না মুজিবুরের। খুব বিশ্বস্ত খালাতো ভাই নূরে আলম মাতব্বরের সাথে শেয়ার করেন, নুর আলম ভাইয়ের অংশ ক্রয় করে রাখবেন বলে আস্বস্ত করে প্রস্তাব করেন, যে পরবর্তীতে বাড়িটা ডেভলপার কোম্পানি দিয়ে ১০ তলা বিল্ডিং তৈরি করবেন।
খালাতো ভাইয়ের আশ্বাসে মুজিবুর সাহস পেয়ে বসবাসের একমাত্র বাড়িটি ডেভেলপমেন্টে দিতে চুক্তিতে রাজি হন এবং বোনদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করেন। খালাতো ভাই, বড় ভাই মিজানুর রহমানের অংশ ক্রয় করে ডেভেলপমেন্ট চুক্তি তৈরি করেন, যা ছিলো প্রতারণা প্রথম সূচনা। ১০/১১/১৬ ইং তারিখে ডেভলপার কোম্পানি ব্লু ব্রিকস হোমসের সাথে চুক্তি সম্পাদিত হয়।
ডেভলপার চুক্তিতে ৪৫ মাসে বাড়ির কাজ সম্পন্ন করে তাদেরকে রেশিও মোতাবেক বুঝিয়ে দিতে রাজি হন, খালাতো ভাইয়েরা (ডেভলপার কোম্পানির মালিক)। ৪৫ মাসের মধ্যে বাড়িটি হস্তান্তর করার কথা থাকলেও ৭৫ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে ও বাড়ির মালিকরা রাস্তায় করা হয়ে নাই, ডেভলপার কোম্পানি যেন পুরাটা সম্পদের মালিক। ডেভলপার কোম্পানি নিজের অংশ প্রথম ও দ্বিতীয় তলা তৈরি করে দুই বছর যাবত ভাড়া দিয়ে রেখেছে এবং ৫ তলা ডেভলপার নিজ অংশের ফ্লাট বিক্রি করে পজিশন ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, অথছ জমির মালিকদের অংশের কাজ ফেলে রেখেছে ডেভলপার কোম্পানি।
ডেভলপার কোম্পানি জমির মালিকদের সাথে আলোচনা না করে একটা স্কুলের সাইনবোর্ড দিয়ে প্রতারণার আরেকটি পাঠশালার খোলে বসন। যার নাম 'ক্যানকো কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল', বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে যার বৈধ কোন কাগজ নাই।
এই বিষয়ে ক্যানকো কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, তাদের স্কুলটি বৈধ, প্রয়োজনে সকল কাগজ পত্র দেখাতে পারবেন।
ডেভলপার কোম্পানির মালিকদেরকে বিশ্বাস করে দাতাগণ জমি পাওয়ার অব এ্যাটনিতে কি আছে বা নেই, তা যাচাই বাছাই না করে স্বাক্ষর করেন।
ডেভলপার কোম্পানির মালিক প্রতারকগণ উল্লেখিত চুক্তিনামার শর্ত পরিবর্তন করে নূরে আলম মাতব্বর, আসাদুজ্জামান, এহতেশাম মাতব্বর, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভিন্ন ভাবে ডেভেলপমেন্ট আইন লঙ্ঘন করে, রেজিস্ট্রার দলিলে ৪৫ মাসের শর্ত ও অন্যান্য শর্ত গুলো বাতিল করে, আজীবন ফেলে রাখতে পারবেন ও নিজের ইচ্ছে মতো পজিশন নিতে পারবেন এমন শর্ত যুক্ত করে পাওয়ার অব এ্যাটনির কাজ সম্পন্ন করেন।
২০২০ মার্চ মাসে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ারমত সময়ে, মুজিবুর রহমান তাদের কাছে হস্তান্তরের সময় জানতে চান ঠিক তখন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির মালিক নূরে আলম মাতব্বর, আসাদুজ্জামান, এহতেশাম মাতব্বর, টালবাহানা শুরু করেন।
মুজিবুর একমাত্র সম্বল পৈত্রিক বাড়ি, তিনটা মেয়ে বড় হচ্ছে, ছেলেটা ছোট টেনশন করতে থাকেন, থানা ও এলাকার মাতব্বরদের কাছে নালিশ করে কোন সফলতা আসে না। প্রতারক ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির মালিক নূরে আলম মাতব্বর, আসাদুজ্জামান, এহতেশাম মাতব্বর, থাকে নিজ বাড়ির কাছে দিয়ে গেলে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন বলে বোনেরা অভিযোগ করেন।
মুজিবুর রহমান প্রতারিত হয়েছে তখন হাহুতাশ শুরু করেন যা তার মৃত্যুর কারণ বলে পরিবারের লোকজনের দাবি।
তিন মেয়ে ও একটা নাবালক ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনে মধ্যে ১৭ এপ্রিল ২০২০ হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মুজিবুর রহমান। তাহার স্ত্রী তিন মেয়ে ও ৭ বছরের একটা ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ডেভলপার কোম্পানী ব্লু ব্রিক হোমস দ্বারা প্রতারিত বোনেরা যখন জানতে পারলেন তখন তারা স্থানীয় ভাবে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
পরবর্তীতে গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার কাছে বোনেরা নালিশ দিলে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির মালিকগণ সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন, গেন্ডারিয়া থানার মধ্যস্থতায় একাধিক বার আলোচনা হয়ে, শেষ রেজাল্ট 'ডেভলপার কোম্পানি সময় নিয়ে চলে আসে। তাদের একমাত্র সম্বল বাড়ির মালিকানা আদায়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।
ব্লু ব্রিকস হোম বিল্ডিং এ-র পুরাটা মালিকানার অবৈধ কাগজ তৈরি করে, আরেক প্রতারণা শুরু করেন কোমলমতি শিশুদের সাথে 'ক্যানকো কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। এই স্কুলের কোন বৈধতা নেই, মানুষের সাথে প্রতারণা করার জন্য এই স্কুল। তারা অভিভাবকদের বুঝাতে চায় এই স্কুলে ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করলে সহজে কানাডা যেতে পারবে।