Note : জরিপের ফলাফল দেখতে ভোট দিন
06-06-2022 | 05:22 pm
শিক্ষা
ঢাকা : ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের ও প্রতিষ্ঠানটিতে নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজধানীর আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ। তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে তাদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তারা শিক্ষা কার্যক্রম বর্জনেরও ঘোষণা দেন। পরে গত শনিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভায় জসিম উদ্দীন আহম্মেদ এবং তার সঙ্গে অভিযুক্ত অন্য দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এর দুদিন পরে আজ সোমবার (৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলানায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। এসময় তার সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত অন্য দুই শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী ও তরুণ কুমার গাঙ্গুলীও তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন, অযোগ্য ও সুবিধাভোগী শিক্ষক-কর্মচারী তাদের নিজ নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে এবং কলেজের সুনাম বিনষ্ট করে গণমাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছেন। তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত গভর্নিং বডির সম্মানিত সভাপতি মহোদয়ের দায়িত্বের সময়কাল নিয়েও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, 'আমি অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজের আচরনবিধি ও শিষ্টাচার ভঙ্গকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের এহেন কর্মকান্ড ও সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কোনরূপ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রায় ৫৫ জন শিক্ষক কর্মচারী জোটবদ্ধ হয়ে মূলত কলেজটিতে এহেন অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রশাসনকে হেয় প্রতিপন্ন করে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়েছেন।’
সাময়িক বহিষ্কারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্ট না পেয়েই কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারীর চাপের মুখে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ৪ জুন গভর্নিং বডির সভা চলাকালীন সময়ে কতিপয় উশৃঙ্খল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, বহিরাগত লোকজন ও কিছুসংখ্যক ছাত্রকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পরিস্থতি উত্তপ্ত করে ফেললে গভর্নিং বডি পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আমাদের কোনও কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান না করেই ২ মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ দাবি করে বলেন, ‘জোটবদ্ধ শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগত্রুটি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়ার কারণেই নিজেদের রক্ষা করতে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটানো হয়েছে।’
এসময় অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের পোশাক কেনায় দুর্নীতি এবং অবৈধভাবে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের বিষয়ে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দেন তিনি। নিজের পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়টি ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায়েই’ রয়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘কলেজে চাকরি নেওয়ার সময় আমার পিএইচডি. ডিগ্রি ছিল না। ২০২০ সালে আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে দূরশিক্ষণের (অনলাইন) মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এর বিজ্ঞপ্তি বলে গবেষণা কর্মের সুপারভাইজার প্রফেসর ড. ড্যালি অ্যাপেন রাজু ও প্রফেসর ড. মিগনোনমুরের অধীনে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পিএইচডি ডিগ্রির জন্য দুইটি সেমিনারে (অনলাইনে) প্রেজেন্টেশন হয়। একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদ ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের কপি আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ক্যালিফোর্নিয়া এর ওয়েব সাইটে প্রবেশ করলে স্টুডেন্ট সার্ভিস প্যানেল এ আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দেখা যায়। এবং যেহেতু দূরশিক্ষণের (অনলাইন) মাধ্যমে পিএইচডি ডিগ্রির কোর্স সম্পন্ন করেছি তাই বিদেশ ভ্রমণ করার প্রয়োজন হয়নি। আমাদের পিএইচডি ডিগ্রির থিসিস পেপারের অংশ ইন্ডিয়ার দুইটি জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই ডিগ্রির জন্য কলেজ থেকে কোনও প্রকার আর্থিক সুবিধা পাই নাই বা দাবি করি নাই।