• ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সোমবার রাত ৩:৪৩
S M Tajul Islam ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

১৩টি জেলায় ৭০টি ক্যাম্পে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠি মৌলিক অধিফার হতে বঞ্চিত

ঢাকা: বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর হতে এদেশের ১৩টি জেলায় ৭০টি ক্যাম্পে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিয়া মৌলিক অধিফার হতে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছে বলে মন্তব্য করেন “স্ট্রান্ডেড পিপল’স জেনারেল রিহ্যাবলিশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন।

রবিবার ২২ ডিসেম্বর জাতীয়  প্রেসক্লাবে, আব্দুস সালাম হলে , এক সংবাদ সম্মালনে বাংলাদেশে বসবাসরত উর্দুভাষীদের বৃহৎ সংগঠন স্ট্রান্ডেড পিপল’স জেনারেল রিহ্যাবলিশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন এই কথা বলেন।

মোহাম্মদ হারুন বলেন,আজকের সংবাদ সম্মেলন আরম্ভ করার পূর্বে সর্ব প্রথমে আমরা মহান আল্লাহ রাব্বুল আল- আমিনের দরবারে অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি,আপনারা অবগত আছেন যে, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর হতে এদেশের ১৩টি জেলায় ৭০টি ক্যাম্পে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিয়া মৌলিক অধিফার হতে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছে। যাংগাদেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতির অনেক উন্নত হলেও এই হতভাগা জনগোষ্ঠিরা এখনও অত্যন্ত দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করছে। বিগত ৫৩ বছরে যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে এই নিরীহ গোষ্ঠির মানবিক সমস্যা সমাধানে আগ্রহ লক্ষ করা যায়নি। আমরা শুধু আশ্বাস আর আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাইনি।

তিনি বলেন,উর্দুভাষীদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্ট্যাটাসকো বিধি-বিধান প্রণয়ন থাকলেও প্রতিনিয়ত ক্যাম্পবাসীরা বিভিন্ন রকমের হয়রানীর শিকার হচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য (১) উচ্ছেদ আতংক, (২) বিনামূল্যে সরবরাহকৃত পানি ও বিদ্যুৎ কেটে যাবার ভয়। আরও আছে প্রভাবশালীদের বৈষম্যবিরোধী আচরণ। উল্লেখ্য যে, বিগত কয়েকদিন যাবত ডিপিডিসি কর্তৃক মোহাম্মদপুরস্থ জেনেভা ক্যাম্পসহ অন্যান্য ক্যাম্পে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে এবং ওয়াসা কর্তৃক সারাদিন পানি দেয়া হচ্ছে না, যার ফলে ক্যাম্পবাসীদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। উর্দুভাষীরা বিগত ৫৩ বছর যাবত মিরপুর সেকশন নং-১১ এর “ডি” ব্লক এলাকায় স্বাধীনতার পর হতে সরকারী জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করে আসছে। স্ট্যাটাসকো বিধি অনুযায়ী কেউ তাদেরকে উচ্ছেদ করে নাই। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় বিগত ১৫ দিন পূর্বে অত্র এলাকায় সিটি কর্পোরেশন রাস্তা প্রশস্থ করার নামে ঐ সব এলাকায় বসবাসকারীদেরকে উচ্ছেদ হবার জন্য মৌখিকভাবে বলে গেছেন। এ নিয়ে আমরা খুবই আতংকিত। গত কয়েকদিন আগে সৈয়দপুরের একটি অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন উর্দুভাষীদের সমস্যা অত্যন্ত দুঃখজন বিষয় আমরা তাদের পূর্ণবাসনের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করিব এটি একটি মানবিক বিষয়। একটি জাতিকে ধ্বংশ হতে দেওয়া যায় না।

সংগঠনের সভাপতি এম শওকত আলী বলেন,আমরা এসপিজিআরসি’র পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম তার বক্তব্যকে সাধুবাদ জানাই। আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে আহবান জানাই যে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলায় মহাজির অধ্যশিত পরিত্যক্ত জমি রহিয়াছে। যেখানে ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষীদেরকে সহজেই পূর্ণবাসন করা যেতে পারে। আপনাদের আরও দৃষ্টি আকর্ষন করছি যে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য জেনেভা ক্যাম্পকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করে রেখেছে, ফলে ক্যাম্পে প্রতিনিয়ত দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ ক্যাম্পের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে থাকে।উপরোক্ত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর ও সমস্যার সমাধানে বিনীত আহব্বান জানাচ্ছি।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি এম, শওকত আলী, বক্তব্য রাখেন  সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন, মোহাম্মদ লিয়াকত, আলী আহমেদ, শামিম বুলু, এডঃ আইয়ুব, মোহাম্মদ ইকবাল, সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *