• ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বুধবার সকাল ১০:৪০
S M Tajul Islam এপ্রিল ২৯, ২০২৫

সেনাবাহিনীকে হামলার ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদি

ডেস্ক : কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সশস্ত্র বাহিনীকে হামলার জবাবে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে সেনাবাহিনী এখন নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদি উচ্চপর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে এ ঘোষণা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহানসহ অন্যরা।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, সন্ত্রাসবাদকে চূর্ণ করার জন্য আমাদের জাতীয় সংকল্প অটুট। আমি আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখি।

উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ওই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। বিশ্লেষকরা এ হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করছেন। সরকারি সূত্র বলছে, পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সহায়ক সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবত তার বাসভবনে পৌঁছান। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।

ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে। পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, শুধু পাকিস্তানি হিন্দু এবং দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদিত বাসিন্দাদের কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে অবস্থানরত প্রায় ১,০০০ পাকিস্তানি নাগরিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

অতিরিক্তভাবে, ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্দু পানি চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এ চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান যে পানির ৮৫ শতাংশ পেত, তার প্রবাহ এখন ভারতের নিয়ন্ত্রণে। পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলে মন্তব্য করেছে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ পাকিস্তানি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পরবর্তী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদি একাধিক বক্তব্যে বলেন, সন্ত্রাসবাদের মদতদাতাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না। ১৪০ কোটির ভারতের জনগণের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। তিনি আরও বলেন, এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের ঘাঁটি চিরতরে ধ্বংস করার। ভারত আর আতঙ্কে ভয় পায় না—আমরা প্রতিটি ষড়যন্ত্রকারীকে খুঁজে বের করব এবং জবাব দেব।

এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা তুঙ্গে। ভারতের কড়া অবস্থান এবং প্রধানমন্ত্রীর সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার বার্তা গোটা অঞ্চলে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *