
সর্বোচ্চ সবর ও দোয়ার কোন বিকল্প নেই: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
ঢাকা : ঢাকা- ২৩ জুলাই/২০২৫ইং
*বিমান দূর্ঘটনায় নিহত পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ*
-তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত সঠিক কারণ চিহ্নিত করা প্রয়োজন
–
শোকে বিপর্যস্ত না হয়ে যেকোন পরিস্থিতিতে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সর্বোচ্চ সবর প্রদর্শন করতে মাইলস্টোনে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও জামায়াত সংসদীয় দলের সাবেক নেতা অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি আজ সকাল ১০টায় উত্তরার তুরাগ থানায় নয়াবাড়ীতে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘনায় নিহত পরিবারের সদস্যদের সাথে ধারাবাহিক সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন। তিনি পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নিহত পরিবারে যান এবং একান্তে তাদের সাথে কথা বলেন এবং শান্তনা দেন। নিহতদের স্বজনরা অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে কাছে পেয়ে আবেগ-আপ্লুত ও কান্নায় ভেঙে পড়েন। নায়েবে আমীর শোকাভিভূত পরিবারের সদস্যদের শোকে কাতর না হয়ে নিহত স্বজনদের শাহাদাত কবুলের জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে বেশি বেশি দোয়া করার পরামর্শ দেন। তিনি ও তার সঙ্গীরা নিহতদের শাহাদাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময় নায়েবে আমীরের সাথে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও ইয়াছিন আরাফাত, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি মু. আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা-১২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রদপ্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক প্রমূখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মৃত্যু পুরোপুরি পূর্ব নির্ধারিত। তা যেভাবেই হোক না কেন আগে-পিছে হওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি মানুষের এখতিয়ার বা আওতাভূক্ত নয়। তবে স্বজন হারানো বেদনা সকলকেই ব্যথিত করে। কিন্তু যেকোন পরিস্থিতিতে আল্লাহ আমাদেরকে সবরের নির্দেশ প্রদান করেছেন। একই সাথে সবর ও সালাতের মাধ্যমে তার কাছে সাহায্য চাইতে বলেছেন। আর সবরকারীদের জন্য পুরস্কার স্বরূপ ‘বায়তুল হামদ’ নামক বিশেষায়িত জান্নাতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মূলত, সরবকারীদের জন্য ভিন্নতর ও উত্তম পুরস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি হাদিসে রাসূল (সা.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, রাসূল (সা.) এক সন্তানহারা পিতাকে শান্তনা দিয়ে বলেছেন, সরবরকারীদের জন্য বিশেষ পুরস্কার রয়েছে। হাসরের ময়দানে হারানো সন্তান তার স্বজনদের পরিচ্ছদ ধরে টেনে জান্নাতের জন্য নিয়ে যাবেন, আর বলতে থাকবেন তাদের না নিয়ে তিনি কোন ভাবেই জান্নাতে যাবেন না। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ সবর ও বেশি বেশি দোয়ার কোন বিকল্প নেই।
সাক্ষাৎ শেষে এক প্রেসব্রিফিং-এ তিনি বলেন, আমরা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে একান্তে কথা বলেছি। পর্যায়ক্রমে আমরা ৯ টি পরিবারে গিয়ে তাদের শান্তনা ও খোঁজ-খবর নিয়েছি। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান আগেই নিহত পরিবার ও আহতদের পাশে থেকে সম্ভব সবকিছু করার ঘোষণা দিয়েছেন। সে ঘোষণা অনুযায়ি আমরা আহতদের চিকিৎসার জন্য অর্থ ও চিকিৎসক প্রেরণ করেছি। দুর্গতদের জন্য যা করা দরকার আমরা সাধ্যের মধ্যে সবকিছুই করবো-ইনশাআল্লাহ। তিনি নিহত ও আহতদের তালিকার প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাজধানী উত্তরা অঞ্চলে কোন হাসপাতালে বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট খোলার দাবির সাথে পুরোপুরি একাত্মতা ঘোষণা করেন।তিনি অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে দূর্ঘটনার সঠিক কারণ চিহ্নিত করা প্রয়োজন।