• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সোমবার রাত ৩:৪২
S M Tajul Islam নভেম্বর ৯, ২০২৫

সংবিধানে গণভোটের বিধান নেই : জয়নুল আবেদীন

ঢাকা: সংবিধানে গণভোটের বিধান নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট এখনও সংবিধান অনুযায়ী চলে। কাজেই এর বাইরে আমাদের কারো যাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। এছাড়া সংবিধানে গণভোটের কোনো বিধান নেই। এটা করতে হলে সংসদে আসতে হবে। জনগণের নির্বাচিত সরকার আসতে হবে। কিন্তু যদি পার্লামেন্ট বা নির্বাচনই না হয় তাহলে কে এই সংবিধান সংশোধন করবে। এই ক্ষমতা তো কাউকে দেয়নি জনগণ।

রোববার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমর্থিত ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের (এনএলএ) নবযাত্রা উপলক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়।

জয়নুল আবেদীন বলেন, সংবিধানের কোনো দোষ নেই। কিন্তু যারা সংবিধানকে পরিচালনা করে বা করেছেন কিংবা যারা ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখতে চেয়েছেন তারাই মূলত ধ্বংসের হোতা। সেজন্য আমরা মনে করি এই সংবিধানকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু করা করতে যাওয়ার অর্থই হচ্ছে আগামী নির্বাচনকে বিলম্বিত করা। তাই গণভোট বা পিআর পদ্ধতি যা কিছুই করেন না কেন সংবিধানের বাইরে আমাদের যাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।

৯ মাস যুদ্ধ করে সংবিধান পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে সংবিধান যেটা আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে পেয়েছি, সেটার মাধ্যমে দেশ চলবে। একসময় কিন্তু এই দেশে সরকার ছিল এটা কেউ বুঝতো না। ৩ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর। এই যে ৭ নভেম্বর চলে গেল। কিন্তু দেশ কিন্তু চলেছে। যখন ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় হয়ে গেল তখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব বিদেশে ছিলেন। সরকারে কে আসবেন, কি হবে, না হবে অনেকেই চিন্তার মধ্যে ছিলেন। শেষমেষ স্বাধীনতার পর রচিত সংবিধান মোতাবেকই শপথ নিয়ে একটা সরকার গঠন করা হয়েছে।

আলী রিয়াজকে ইঙ্গিত করে এই আইনজীবী বলেন, ভেবেছিলাম এ সরকার নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। ভোটের অধিকার, মানবাধিকার, স্বাধীনতার সুফল দেওয়া হবে। অথচ এখন নতুন করে আলোচনায় আসছে জুলাই সনদ। আর জুলাই সনদের যাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো তিনি আবার আমেরিকান নাগরিক। তিনি ওইটা উপলব্ধি করেননি। দুদিন আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব বলেছেন যে সনদে আমরা সই করলাম এই সনদ তো সেই সনদ নয়। এখন এটার সাক্ষীটা কে দেবে? তিনি তো চলে গেছেন দেশ ছেড়ে। টাকা-পয়সা যা নেওয়ার নিয়ে চলে গিয়েছেন।

গোটা জাতিকে এ সরকারপ্রধান বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখন এনসিপি একটি রাজনৈতিক দল। তারা বলছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। আর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বক্তব্য হলো জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক আছে। আমরা কিছু ডিসেন্ট দিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছিলাম। এনসিপি তো স্বাক্ষর করেনি। কাজেই তাদের দোষ দেওয়া যায় না। কিন্তু এখন দেখি ভিন্ন রকম। এর অর্থ হচ্ছে সরকারপ্রধান নিজেই গোটা জাতিকে একটা বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। একদিকে তার প্রেস সচিব বলছেন ১২ তারিখেই সাধারণ নির্বাচন হবে। আরেকদিকে কয়েকটি রাজনৈতিক দল বলছে গণভোট আগে করতে হবে। এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। কারণ আমরা তাদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছিলাম।

ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার ও যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূরের সঞ্চালনায় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এনসিপির আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা ও এনএলএ-এর মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট সাকিল আহমেদ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিব। এতে সভাপতিত্ব করছেন ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক এস. এম. আজমল হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *