ভলোবাসার সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে যেসব কারণে
আমাদের জীবনে চলার পথে অনেকের সঙ্গেই পরিচয় হয়। সেখানে মানুষজন কতো কথাই না বলে থাকে। তবে কিছু কথা হয়তো আপনি শোনেননি। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার জীবনে চলার পথকে সহজ করে তুলতে সহায়ক। বিশেষ করে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রথম শর্ত পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও বিশ্বাস এবং এসবের পাশাপাশি থাকবে মান-অভিমান কিংবা ভুল বোঝাবুঝি। আর এই সবকিছু মেনে নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই।
তবে সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি মাঝেমধ্যে হলে ঠিক আছে। কিন্তু, তা প্রতিনিয়ত লেগে থাকা চিন্তার বিষয়। একে অন্যকে বুঝতে না পারলে সেই সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি বৃদ্ধি পাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। চলুন সেসব কী কী জেনে নেওয়া যাক-
সমালোচনা করা:
সঙ্গী মানে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। সঙ্গী মানে যিনি আপনার সঙ্গে আছেন, আপনার সুখ ও দুঃখের অংশীদার। তাই তার ভুলগুলোর সমালোচনা করা বন্ধ করুন। এর পরিবর্তে কোথায় তার ভুল হচ্ছে তা তাকে বুঝিয়ে বলুন। আপনি যদি অনবরত তাকে আক্রমণ করে কথা বলতে থাকেন তাহলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তার কাছ থেকে সম্মান আশা করতে পারবেন না। তাই অপরপক্ষ থেকে ভালোবাসা পেতে চাইলে তাকেও ভালোবাসা ও সম্মান জানানো জরুরি। যদি চান সে আপনাকে বুঝুক, তাহলে তাকেও বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
অকারণে অভিমান করা:
ছোটখাটো বিষয়ে অভিমান করবেন না। ধরা যাক, আপনার জীবনসঙ্গী কোনো একটি বিশেষ দিনের কথা ভুলে গেলেন। আপনার কাছে এটা হয়তো খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তারপরও বিষয়টাকে খুব বড় করে দেখা যাবে না। কিংবা ধরুন, আপনি তাকে কিছু একটা করতে বলেছিলেন, যা তিনি ভুলে গেছেন। এমন বিষয় নিয়ে রাগারাগি করবেন না। কোন কারণে তার প্রতি আপনার অভিমান হয়েছে কিংবা আপনার মন খারাপ হয়েছে, তা প্রকাশ করতে কিন্তু ক্ষতি নেই। তবে এসব নিয়ে যাতে অশান্তির সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
দোষারোপ করা:
নিজে দোষ থেকে বাঁচতে সঙ্গীকে দোষারোপ করেন? যেকোনো ভুলের দায় তার কাঁধে ঠেলে দেন? এমনটা করতে থাকলে নিজেকে হয়তো সাময়িক কিছু ঝামেলা থেকে রক্ষা করতে পারবেন কিন্তু এতে আপনাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে। তাই দোষারোপ বন্ধ করুন। এমনকি যদি সে সত্যিই দোষ করেও থাকে তবে তাকে শোধরানোর জন্য বুঝিয়ে বলুন। এক্ষেত্রে আপনার দোষারোপ করার অভ্যাস থাকলে তা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করবেই।
সম্পর্কের খুঁটিনাটি অন্য কাউকে জানানো:
প্রতিটি সম্পর্কেই কখনো না কখনো তিক্ততার সৃষ্টি হয়। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কোনো তিক্ততা সৃষ্টি হলে সে কথা কখনোই অন্য কাউকে বলতে নেই। সম্পর্কের অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয়ও কারও সঙ্গে ভাগ করে নেবেন না। সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ করবেন না, যা সেই বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে। ব্যক্তিগত সম্পর্ককে ‘ব্যক্তিগত’ই রাখুন।
অবহেলা করা:
ভালোবাসার যেমন নিজস্ব সৌন্দর্য আছে, চাইলে তা লুকিয়ে রাখা যায় না, তেমনই অবহেলারও আছে নিজস্ব রূপ। আপনি মুখে একটা কথা না বললেও সে কিন্তু ঠিকই বুঝে যাবে যদি তাকে অবহেলা করেন। আপনার অবহেলা ধীরে ধীরে তাকে বিষণ্ণ করে তুলতে পারে। যদি তার প্রতি আপনার কোনো ভালোবাসা অবশিষ্ট থাকেও তাহলে তা সে বুঝতে পারবে না, এটাই স্বাভাবিক। মনে রাখবেন, ভালোবাসা আর অবহেলা কখনো একসঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না।