
‘বাটা’ চেক রিপাবলিক থেকে উৎপত্তি
ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়। এর সুযোগ নিয়ে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে বহুজাতিক কোম্পানি বাটার কয়েকটি বিক্রয়কেন্দ্রে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। বাটা ইসরায়েলি মালিকানাধীন বা ইসরায়েল সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান—এমন প্রচার চালিয়ে হামলা করা হলেও বাটার ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা।
সোমবার বাটার কয়েকটি বিক্রয়কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় ওইদিন রাতেই একটি বিবৃতি দেয় বাটা কোম্পানি। সেখানে কোম্পানিটি জানায়, বাটা ইসরায়েলি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান—এমন দাবি ভুল। এমনকি চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে এর রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি বিশ্বব্যাপী একটি বেসরকারি ও পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানি, যা চেক প্রজাতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
বিবৃতিতে বাটা জানায়, মিথ্যা তথ্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাটার কিছু খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রে ভাঙচুর করা হয়েছে।
বাটার কোম্পানি সেক্রেটারি রিয়াজুর রেজা ফয়সাল জানান, কোম্পানি মালিকানা ও যাত্রার ইতিহাস সবকিছুই ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। এর সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, তদানিন্তন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের জলিন শহরে (বর্তমান চেক রিপাবলিক) ১৮৯৪ সালে যাত্রা শুরু হয় বাটার। সে সময় টমাস বাটা তার ভাই আন্তোনিন ও বোন আনাকে সঙ্গে নিয়ে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩১ সালে ভারতে বিক্রয়কেন্দ্র খুলে ব্যবসা শুরু করে বাটা। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর ১৯৫১ সালে বাটা সুজ কোম্পানি (পাকিস্তান) লিমিটেড নামে তৎকালীন পাকিস্তানে কার্যক্রম শুরু করে বাটা। কোম্পানির অধীনে ১৯৬২ সালে তারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) টঙ্গীতে কারখানা স্থাপন করে। বাংলাদেশে বাটার দুটি কারখানার অন্যটি রয়েছে ধামরাইয়ে। বর্তমানে কোম্পানিটি ৭০টিরও বেশি দেশে তার কার্যক্রম এবং ২০টি দেশে ২৭টি কারখানা পরিচালনা করে। বাটার রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক রিটেইল আউটলেট।
শুধু ব্যবসা নয়, বাংলাদেশে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও জড়িয়ে আছে বাটার নাম। ১৯৭০ সালে বাটার নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে আসেন উইলিয়াম এ এস ওডারল্যান্ড। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তিনিও নেমে পড়েন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে। পরে বিদেশি এই বন্ধুকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।