
ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক খাত থেকে লুটপাট, অর্থপ্যাচার ও দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র
এস এম তাজুল ইসলাম : ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক খাত থেকে লুটপাট, অর্থপ্যাচার ও দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র।
২০ সেপ্টেম্বর শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী ব্যাংক-বীমা পেশাজীবি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী ডক্টর আব্দুল মঈন খান।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে ব্যাংক লুট ও সুরা ঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩ হাজার ৪০০কোটি চলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। (সূত্র: প্রভাবমালী ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যাধিয়াল টাইমস)
দেশের ইতিহাসে বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজান্ত চুরির দেক্কার জনক ও অর্থ কেলেংকারীর মাধ্যমে দেশ থেকে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঁচার করা হয়েছে এই ফ্যাসিস্ট হাসিনার ও তার দোসরদের যোগ্যফজশের মাধ্যমে।
দরবেশ খ্যাত ফ্যাসিস্টের দোসর সালমান এফ রহমান একাই লুট করেছেন প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা। সামে বেনামে ১৮৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে এ টাকা লুট কয়েছেন তিনি।
* ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৫০ হাজার কোটি টাকা।
* পুঁজি বাজার থেকে নিয়েছেন ৭হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংক থেকে ঋণের নামে দেওয়া এসব অর্থের মধ্যে ২৩ হাজার ১২০ কোটি টাকা এখন খেলাপি। (সুত্র আমার দেশ এর অনুসন্ধানী রিপোর্ট)
লুটপাট ও নামে যেণামে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়ার কারনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। যে ৯টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে বলে যানা গেছে, সেগুলো হলো এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জি এস পি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, আভিতভা ফাইন্যান্স, পিপল’স লিজিং এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। (সূত্র। দ্যা ডেইলি স্টার)
শুধাযাত্র ব্যাংক খাত থেকেই গত ১৫ বছরে লুট হয়েচে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। (সূত্র। মানবজমিন ও সিপিডি)
বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও আওয়ামী ওপিপার্ক বা হাসিনার ক্যাশিয়ার খ্যাত এস আলম গ্রুপের মাসিক সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলন, একাই ব্যাংক খাত থেকে লুট করেছেন প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা।
এছাড়া এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারন্যা নজরুল ইসলাম মজুমদার, পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানে নাফিজ সারাফাত সহ আরও কয়েকজন মাফিয়া ব্যাবসায়ী ও ফ্যাসিস্টের দোসররা গত সরকারের ছত্রছায়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন ব্যাংক থেকে। (সূত্র। দৈনিক সময়ের আলো)
হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপসহ অন্তত ২৪টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট ও পাচার করা হয়। এছাড়াও তৎকালীন বি এফ আই ইউ এর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে থার্মেক্স গ্রুপ, জিনাত এন্টারপ্রাইজ, ডলি কন্সট্রিকশনের অনুকূলে ৪০০ কোটি টাকা, সান্তনা এন্টারপ্রাইজ সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫০০ কোটি টাকা, সাদ-মুসা গ্রুপের নামে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা, শিরিন স্পিনিং মিলসের অনুকূলে ১০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার ও টাইগার আইটির নামে ১ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়। (সূত্র। CHY News 24)
প্রশান্ত কুমার হালদার বা পিকে হালদারের নেতৃত্বে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স সহ কয়েকটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সারে তিন হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৬ টি লাইফ বীমা কোম্পানী এবং ৪৬ টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানী যা সর্বমাট ৮২ এর মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী সাশনামলেই ৬০টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
গত সরকারে সময় ২০১৩ সালেই বাংলাদেশ ব্যাংক রাজনৈতিক বিবেচনায় যে ৯ টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছিলো সেগুলো:- ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এন আর বি কমার্শিয়াল ব্যাংক, এন আর বি ব্যাংক, এস বি এ সি ব্যাংক, দ্যা ফার্মাস ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক ও মধুমতি ব্যাংক।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে ২০২০ সালে শুধুমাত্র বাস-ট্রাক ও পরিবহন মালিক তৎকালীন ফ্যাসিবাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র ও স্বার্থ রক্ষার কারনেই বাংলাদেশের মটর ইন্স্যুরেন্সের বাধ্য বাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রাষ্ট্র প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ভ্যাট ও ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে পরিবহন খাতে নিয়োজিত পরিবহন শ্রমিকরা ও যানবাহনের যা একটা সভ্যদেশে নজির বিহীন।