• ২৩শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার রাত ২:৫৬
S M Tajul Islam জুলাই ৮, ২০২৫

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পক্ষে অবস্থানকারী অর্ধশতাধিক সাংবাদিকের বিবৃতি

ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন,‘খুনি হাসিনার পক্ষে বসুন্ধরার মিডিয়া যে ভূমিকা পালন করেছে, আমরা তা ভুলে যাইনি। এই বক্তব্যকে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থানকারী অর্ধশতাধিক সাংবাদিক বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমকে হুমকি ও সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ এবং শেখ হাসিনা সরকারের সহযোগী কারাবন্দী সাংবাদিকদের জামিনের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার ৫১ জন সাংবাদিকের সাক্ষর করা এ বিবৃতিতে সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলা, চাকরিচ্যুতি, সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ১১ মাস ধরে তালাবদ্ধ আওয়ামী সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) কার্যালয় খুলে দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক তৈমুর ফারুক তুষার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশ এখন মব সন্ত্রাসের কাছে জিম্মি। গণমাধ্যমও এই জিম্মি দশার বাইরে নয়। সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলা, চাকরিচ্যুতি, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের মতো ঘটনাগুলোর কারণে সাংবাদিক সমাজ এক ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। দেশের একাধিক শীর্ষ সংবাদপত্রের কার্যালয়ের সামনে মব সন্ত্রাসীরা গরু জবাই করে জিয়াফতের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে চিহ্নিত মব সন্ত্রাসীরা এসব ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। ফলে এটি ধারণা করা অমূলক নয় যে, ক্ষমতাধর কোনো মহল এসবে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।’

এতে বলা হয়, ‘দেশি বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং অধিকার কর্মীদের দাবি অনুসারে, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গত ১১ মাসে সারা দেশে ঢালাও হত্যা মামলাসহ নানা হয়রানিমূলক মামলায় আসামি হয়েছে অন্তত ৪১২ জন সাংবাদিক। গ্রেপ্তার করা হয় ৩৯ জন সাংবাদিককে। ১৬৮ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সারা দেশের প্রেসক্লাবগুলো থেকে ১০১ জন সাংবাদিকের সদস্যপদ স্থগিত, বাতিল কিংবা বহিষ্কার করা হয়েছে। বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছেন তিন শতাধিক সাংবাদিক। শতাধিক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। গত ১১ মাসে সহস্রাধিক সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো দখল করা হয়েছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) কার্যালয় ১১ মাস ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আইনি প্রতিকার বা জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কারাগারে বন্দি সাংবাদিকরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিনাবিচারে মাসের পর মাস কারাবন্দি আছেন সাংবাদিকরা। এগুলো মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে এই মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আনবে, গণমাধ্যম কর্মীদের নানা ট্যাগ দিয়ে জুলুম, হয়রানির শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করবে, চাকরির সুরক্ষা দেবে। যাতে করে সাংবাদিকরা নির্ভয়ে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে পারেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি ঘটছে না। ফলে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

এতে বলা হয়, ‘আমরা সব সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচার, সাংবাদিক হয়রানির নিন্দা এবং কারাবন্দি সাংবাদিকদের জামিনের দাবি জানাই। সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করুন। গণমাধ্যমকে যারা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠ থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা পরিহার করুন।’

বিবৃতিতে সই করেছেন (জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে নয়) আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ( ডিইউজে) সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল কবীর, বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবির, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন ইমন, টিভি ক্যামেরাজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (টিসিএ) সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক হোসেন (তানভীর), ডিআরইউয়ের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক মুখপাত্রের সম্পাদক শেখ জামাল, বিএফইউজে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, বিএফইউজে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন, সিনিয়র সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক জামাল উদ্দিন, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাঈদুজ্জামান সম্রাট, ব্রাক্ষণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক নিজামুল হক বিপুল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ আলী, সিনিয়র সাংবাদিক মাইনুল হোসেন পিন্নু, গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম শান্ত, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম, সিনিয়র সাংবাদিক তৌফিক মারুফ, সিনিয়র সাংবাদিক রিয়াজুল বাশার, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) কোষাধ্যক্ষ সোহেলী চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, টেলিভিশন প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের (টিপিএ) সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল শাহীন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক প্রচার সম্পাদক রাজু হামিদ, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক জনকল্যাণ সম্পাদক জুবায়ের চৌধুরী, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক সাজেদা পারভীন, সকলের সংবাদের সিনিয়র রিপোর্টার মো. রমজান আলী, দৈনিক ঢাকার প্রধান প্রতিবেদক গাজী তুষার আহমেদ, জিটিভির ওয়ারেচ্ছুন্নবী খন্দকার, সকাল সন্ধ্যার প্রদীপ চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক নারী বিষয়ক সম্পাদক ঝর্ণা মনি, সিনিয়র সাংবাদিক ইখতিয়ার উদ্দিন, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিইউজে) সভাপতি জে এম রউফ, স্বাধীনতা সাংবাদিক পরিষদের সদস্য সচিব হামিদ মোহাম্মদ জসিম, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক শামীমা দোলা, সিনিয়র সাংবাদিক এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন সবুজ, সিনিয়র সাংবাদিক ফারজানা বিনতে হোসাইন (ফারজানা শোভা), সিনিয়র সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম সুজন, বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক তৈমুর ফারুক তুষার, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাহী পরিষদ সদস্য নাসরীন গীতি, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি শামীমা আক্তার, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক ও কিবরিয়া চৌধুরী, পলিটিক্যাল রিপোর্টার্স ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম জহিরুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *