• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রবিবার রাত ১০:০৭
dainikprithibi অক্টোবর ৯, ২০২৪

পারকিনসনস কি শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদের হয়

পারকিনসনস মস্তিষ্কের একটি ব্যাধি বা ক্ষয়রোগ। মস্তিষ্কে একধরনের রাসায়নিক পদার্থের ঘাটতির কারণে এই রোগ দেখা দেয়। পারকিনসনস বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা দেয় বলে আমরা জানি। কিন্তু এই রোগ অপেক্ষাকৃত অল্প বয়সেও হতে পারে।

হাতের কম্পন, পেশির দৃঢ়তা কমা ও সঞ্চালনের সমন্বয়ের মতো অসুবিধা এ রোগের অন্যতম উপসর্গ। এই রোগের প্রাথমিক সূত্রপাত হতে পারে কম বয়সীদের মধ্যেও। তরুণ যাঁরা পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত, তাঁদের আচরণগত পরিবর্তন বা স্মৃতিশক্তি হ্রাস না–ও পেতে পারে, যা সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। কাঁপুনি, নড়াচড়ার ধীরতা, দৃঢ়তা হ্রাস, মুখের ভাব প্রকাশের ক্ষমতা কমে যাওয়া, কথা বা বক্তৃতার সময় পরিবর্তন তরুণদের মধ্যে পারকিনসনসের লক্ষণ। তরুণ পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ শতাংশের কম।

তরুণদের মধ্যে পারকিনসনস রোগের লক্ষণ কী? পারকিনসনস ডিজিজের স্বাভাবিক উপসর্গ গুলো হচ্ছে কাঁপুনি, হাত কাঁপা (যা সাধারণত একপাশে শুরু হয়), কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন (আওয়াজ কমে যায়), সব কাজে ধীরতা। বিশ্রামের সময় হাতের কাঁপুনি বেশি হয়। নড়াচড়ায় ধীরগতি ব্রাডিকাইনেসিয়া নামে পরিচিত। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি গোসল করতে, পোশাক পরতে, খাবার খেতে বেশি সময় নেন। ধীরগতিতে হাঁটেন, হাঁটার সময় পা টেনে আনতে থাকেন এবং ঘুরে দাঁড়ানোর সময় ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তে পারেন।

এ ছাড়া শরীরের পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে বাহু, ঘাড় ও পা। মুখের অভিব্যক্তির প্রকাশ কমে যায়। কথা বলা বা বক্তৃতা করার সময় সমস্যা হয়। ঝাপসা বাক্য, দ্বিধাগ্রস্ত কথা বা ধীর কণ্ঠস্বর লক্ষণীয়। মাইক্রোগ্রাফিয়া অর্থাৎ ছোট ও সংকুচিত হাতের লেখা, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে পারে। ধীরে ধীরে রোগটি আরও খারাপ হয়। এসব লক্ষণের সঙ্গে রোগীর ঘুমের ব্যাঘাত, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্রাবের অসংযম, অস্বাভাবিক ঘাম, বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও স্মৃতিশক্তির সমস্যা অনুভব করতে পারেন।

তরুণ পারকিনসনস রোগীদের সাধারণত আচরণগত পরিবর্তন বা স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় না, যা অনেক বয়স্ক রোগীর মধ্যে দেখা যায়। তবে তরুণ রোগীদের পারকিনসনস রোগ পেশাগত, পারিবারিক জীবন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা ভালো।

ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক, (ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *