• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সোমবার রাত ৩:৪৩
S M Tajul Islam নভেম্বর ৯, ২০২৫

ঝালকাঠি-২ আসনে প্রার্থী বদলের আহ্বান জীবা আমিনার

ঢাকা : বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও অ্যাসিস্ট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপার্সন ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য জীবা আমিনা আলগাজি অভিযোগ করেছেন, ঝালকাঠি-২ আসনে আগামী নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থী ইলেন ভুট্টো নিজের ইউনিয়নেও বিগত সময়ে উন্নয়ন করতে পারেননি। মনোনয়ন পাওয়ার আগে-পরে তিনি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নিয়ে সখ্যতা সৃষ্টি করেছেন, যে কারণে স্থানীয় বিএনপির অনুসারীরাও বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। ফলে, বিগত দিনের অভিজ্ঞতা ও উন্নয়নহীনতার কারণেই ইলেন ভুট্টোর জায়গায় নতুন কাউকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছে নলছিটির মানুষেরা।

রোববার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির মহিলা দলের অন্যতম সহ-সভাপতি জীবা আমিনা বলেন, আগামী দিনের ভোটে মূল চ্যালেঞ্জ নতুন ভোটাররা। দল থেকে করা জরিপে সেগুলো সঠিকভাবে এসেছে কিনা, আমি জানি না। সাধারণ ভোটার, নতুন ভোটাররা আগামী বাংলাদেশ নির্মাণের অন্যতম প্রধান সহযোদ্ধা, তাদের মতামত নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলবে। যে কারণে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রার্থী নির্ধারণ করা জরুরি।

এসময় প্রশ্নের উত্তরে জীবা আমিনা উল্লেখ করেন, মনোনয়ন না পেলেও তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচনে অংশ নেবেন না।

তার মন্তব্য ‘আমি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করেছি, আমি তার বিরুদ্ধে যেতে পারবো না। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের রাজনীতির আদর্শ আমি লালন করি, আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশের নতুন এক আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। আমরা সবাই তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।’

তিনি বলেন, আমি মনে করি যে আমার দলের সিদ্ধান্ত অবশ্যই আমি মেনে নেব। যে সিদ্ধান্তই হোক। আমার মতো মানুষ তো রাস্তাঘাটে সবসময় ভীষণ সক্রিয়। আমি একটা কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—আমার অনুরোধ হলো, এমন একজনকে যেন আবার আমাদের ওপর চাপিয়ে না দেওয়া হয়, যার কারণে আমাদের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়বে। আমি মনে করি, এতে সাধারণ জনগণও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পড়বে।

জীবা আমিনা দাবি করে বলেন, এখন যা শোনা যাচ্ছে, ওনার (ইলেন ভুট্টো) সঙ্গে অনেক আওয়ামী লীগের ঠিকাদার শ্রেণির লোকজন যুক্ত আছেন। আমার এলাকার মানুষজন প্রায়ই বলি, উনি তো আসলে ‘ঠিকাদার লেডি’—একজন হ্যান্ডব্যাগ ক্যারিয়ার ছাড়া আর কিছু নন। উনাকে যদি আবার নিয়ে আসা হয়, তাহলে কোনো উন্নয়নই হবে না। কারণ, উনার নিজের ইউনিয়নেই কোনো উন্নয়ন হয়নি।

জীবা আমিনা প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা এমন একজনকে কেন বেছে নেব? আমার অনুরোধ থাকবে, দল যেন এমন একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়, যিনি সত্যিই এলাকার জনগণের জন্য কাজ করবেন, নেতাকর্মীদের পাশে থাকবেন এবং দলকে আরও শক্তিশালী করবেন।

পার্লামেন্টে যাওয়া শুধু পার্লামেন্টে বসার জন্য নয় বলে উল্লেখ করে এই নারী নেত্রী বলেন, সেখানে কাজ করার, অবদান রাখার প্রয়োজন আছে। সংসদ সদস্য মানেই তো দেশের নীতিনির্ধারক। কিন্তু আমার মনে হয়, তিনি সেই যোগ্যতা রাখেন না। আমি জানি না, আপনারা তাকে নেনেন কিনা—কিন্তু সংসদে ওনার কার্যকালীন সময়ে আমি কখনো তাঁক কোনো বিষয়ে কথা বলতে শুনিনি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার মধ্যে সেই সক্ষমতা নেই।

তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে খারাপ লাগে এই ভেবে যে, আমরা ঝালকাঠির মানুষ—এখানকার শিক্ষার মান, চিন্তাভাবনা অনেক উন্নত। আমাদের মতো মানুষকে যদি এমন একজন ব্যক্তি প্রতিনিধিত্ব করেন, যিনি কোনোভাবেই এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেননি, সেটা মেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমাদের দেশে তরুণ ভোটারের সংখ্যা কিন্তু বিশাল। এখনকার ভোটারদের বড় একটি অংশই ৩৫ বছরের নিচে। কয়েক বছর আগেও এ সংখ্যা এত বেশি ছিল না। এখন প্রশ্ন হলো—এই তরুণ প্রজন্ম ওই ব্যক্তিকে কীভাবে দেখবে? তারা কি তাদের বাবা-মায়েরা যেভাবে তাকিয়েছেন, সেই একইভাবে তাকাবে? আমার মনে হয়, না। তবে একটা বিষয় অবশ্যই বলা দরকার—যারা বয়সে একটু বড় হলেও সবসময় মাঠে-ময়দানে ছিলেন, জনগণের পাশে থেকেছেন, মানুষ কিন্তু তাদের দেখেছে, চেনে। আমরাও মাঠে থেকে অনেক কঠিন পরিস্থিতি সামলেছি নিজেরা।

জীবা আমিনা মনে করেন, জনগণ এখন অনেক সচেতন। তারা গত ২৫ বছরে সব দেখেছে—ভালো সময়ও, খারাপ সময়ও। বিশেষ করে এই সময়ের বেশির ভাগটাই ছিল আওয়ামী লীগের শাসনকাল। আর এই সময়ে যে অত্যাচার, নির্যাতন, নানা ধরনের সংকট হয়েছে—সেটা জনগণ খুব ভালোভাবেই জানে ও মনে রেখেছে।

ইলেন ভুট্টো প্রসঙ্গে জীবা আমিনা বলেন, আমি মনে করি না যে কিছু ভিন্ন বলছি, তবে পরিবর্তন অবশ্যই আসা উচিত। প্রশ্ন হলো—এলাকার সমস্যা আসলে কোথায়, আর সেই সমস্যাগুলো আপনি কীভাবে চিহ্নিত করছেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *