
চার খাতে সংস্কারের পরামর্শ কর্মসংস্থান হবে ৩৫ লাখ
ঢাকা : চারটি খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে পারলে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে এবং এতে প্রায় ৩৫ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হতে পারে। খাত চারটি হলো– পরিবেশবান্ধব তৈরি পোশাক, মধ্যবিত্তদের জন্য আবাসন, রং ও ডাইং শিল্প এবং ডিজিটাল আর্থিক সেবা।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫-এ বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ‘কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়াগনস্টিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট নীতিগত পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন আবাসন ইউনিট নির্মাণে সহায়তা করে প্রতিবছর ২৩ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে। দেশীয় রং ও ডাইং উৎপাদন, সম্প্রসারণ করে আরও ৬ লাখ ৬৪ হাজার আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া ডিজিটাল আর্থিক সেবা সংস্কার করে ৯৬ হাজার থেকে ৪ লাখ ৬০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চার খাতে বিনিয়োগে বিদ্যমান বাধা দূর করতে সরকার কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারলে সেগুলো দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে, তৈরি হবে কর্মসংস্থান এবং স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা তৈরিতে সহায়ক হবে।
এতে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতকে পরিবেশ, টেকসই এবং শ্রমমানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ওপর জোর দিতে হবে। এ ছাড়া ডিজিটাল মানচিত্র ও সম্পত্তি নিবন্ধনে নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে গৃহঋণ প্রাপ্তি সহজ হয়। এ ছাড়া সম্পত্তির মূল্যায়ন বিশ্বব্যাংকের ভাষায়, ‘পুরোনো ট্যাক্স মূল্য’-এর পরিবর্তে বর্তমান বাজারমূল্যে যেন হয়।
বাংলাদেশ সিপিএসডি উদ্বোধনের পর প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তব্য দেন সরকারের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। নিপ্পন পেইন্টের অরুণ মিত্র, বিকাশের কমল কাদির, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আরএফ হোসেন, অনন্ত গ্রুপের এমডি শরীফ জাহির এবং এবিসি রিয়েল এস্টেটের এমডি শ্রাবন্তী দত্ত এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বলেন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সুপারিশে বেসরকারিভিত্তিক প্রবৃদ্ধির জন্য কার্যকর নীতিমালা ও কৌশল প্রণয়নে দিকনির্দেশনা আছে। অন্তর্বর্তী সরকারও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়তে চায়। পাশাপাশি সম্ভাবনাময় শিল্পগুলোকে সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারের উদ্দেশ্য আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশে ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ব্যবসায় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশে জরুরিভাবে রূপান্তরমূলক নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা প্রয়োজন, যাতে দেশের কোম্পানিগুলো সম্প্রসারিত হতে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে। এভাবে কাজ করা হলে প্রতিবছর কর্মবাজারে প্রবেশ করা কোটি কোটি তরুণের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিশ্চিত করা যাবে।