• ২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বুধবার রাত ৮:২২
S M Tajul Islam অক্টোবর ২২, ২০২৫

চারুকলার শিক্ষার্থীদের সীসামুক্ত রঙের দাবি

ঢাকা : ঢাকা, ২২ অক্টোবর ২০২৫: সীসামুক্ত নিরাপদ রঙের দাবিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে চারুকলা অনুষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক সীসা বিষক্রিয়া প্রতিরোধ সপ্তাহ (ILPPW) ২০২৫-এর অংশ হিসেবে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন- এসডো ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের যৌথ উদ্যোগ এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও লিপ ( lead exposure elimination project – LEEP) এর সহযোগিতায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। “আর্ট ফর চেঞ্জ: ওপেন ফোরাম এন্ড ডিসকাশন অন লেড- সেফ পেইন্টস” শীর্ষক এই সভায় সীসামুক্ত নিরাপদ রঙ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষার্থী ও আলোচকরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন।

চারুকলা অনুষদকে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রঙিন প্রাণ। আর চারুকলার প্রাণ হলো রঙ। রঙ যাদের নিত্যদিনের অংশ, তাদের জন্য রঙ কতটা নিরাপদ? কারণ দেশের অধিকাংশ ডেকোরেটিভ রঙেই সীসার উপস্থিতি রয়েছে। যদিও বাংলাদেশে ডেকোরেটিভ রঙের জন্য ৯০ পিপিএম সীসা মান নির্ধারণ করা হয়েছে, তবুও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই মান অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবেশে সীসার ভয়াবহতা তুলে ধরে চারুকলার শিক্ষার্থীদের সচেতন করার লক্ষ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের লেকচার থিয়েটারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত এই সভায় ঢাবি চারুকলা অনুষদের ডিন ড. আজহারুল ইসলাম শেখ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসডোর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ। উন্মুক্ত আলোচনা ও বিশেষজ্ঞ মতামত উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েত হোসেন ও এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইসর অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসডোর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, ‘ডেকোরেটিভ পেইন্টে সীসার মানদণ্ড নিয়ে আমাদের দেশে প্রচলিত আইনকে প্রয়োগ করতে হবে। শুধুমাত্র ব্র্যান্ড ভিত্তিক মনিটরিং নয় ক্ষুদ্র ও লোকাল প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পর্যবেক্ষণে আনতে হবে।

ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘এ ধরণের আয়োজনের জন্য এসডোকে ধন্যবাদ, এটি নতুন একটি সম্পর্কের সূচণা। আমাদের শিক্ষার্থীরা আজকের আলোচিত এই নিরাপদ সীসামুক্ত রঙ বিষয়ে আরও সচেতন হবো।‘

ড. এনায়েত হোসেন বলেন, ‘সীসা আমাদের শরীরে শুধুমাত্র সরাসরি রঙের মাধ্যমে প্রবেশ করে এমন নয়। এটি খাবার, ত্বক ও নিঃশ্বাসের মাধ্যমেও প্রবেশ করতে পারে। যারা নিয়মিত রঙ নিয়ে কাজ করছেন তাদের সীসাযুক্ত রঙ নিয়ে ভাবা উচিত। এগুলো আবার পরিবেশেও মিশে যাচ্ছে, যা মাটি এবং পানিও দূষণ করে।‘

ড. আবুল হাশেম বলেন, ‘ শিল্পীরা নিয়মিত রঙ নিয়ে কাজ করেন। চিত্রশিল্পীদের মাধ্যমে আমরা আমাদের আয়োজন গুলো রঙিন করি। অথচ এই রঙে এত বিপজ্জনক উপাদান সীসা থাকতে পারে তা নিয়ে আমরা কতটা ভাবি বা সময় দেই।‘

এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন,’ তরুণরা আমাদের চালিকা শক্তি। তরুণদের জন্য আমরা একটি সীসামুক্ত ভবিষ্যত চাই। তরুণদের অংশগ্রহণ সীসাবিরোধী এই ক্যাম্পেইনকে আরও জোরালো করবে।‘

সভায় বাংলাদেশে রঙে সীসার ব্যবহার প্রবণতা নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন এসডোর সরকারী প্রোগ্রাম অফিসার মালিহা হক। এছাড়াও উত্তর পর্বে শিক্ষার্থী ও বক্তারা প্রশ্ন এবং মতামত আদান প্রদান করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় উপাদান রঙে বিপজ্জনক রাসায়নিক সীসার উপস্থিতির ভয়াবহতা ও সীসামুক্ত নিরাপদ রঙের গুরুত্ব তুলে ধরে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *