
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী গ্রেপ্তার
ঢাকা: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী গ্রেপ্তার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি মো. তোফাজ্জল হোসেন, যিনি নগরীর চাঙ্গেনী মোড় এলাকার বাসিন্দা ও কুসিকের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনের ছোট ভাই। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার বিবরণ:
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। মামলাগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে সদর দক্ষিণ এবং কোতয়ালি মডেল থানায় রুজু করা হয়। তিনি উভয় মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হলেও এতদিন নিয়মিত অফিস করছিলেন এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পূর্বের হত্যাকাণ্ড মামলার সম্পৃক্ততা:
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওসির ভাষ্য অনুযায়ী, তোফাজ্জল ২০২০ সালের ১০ জুলাই চাঙ্গেনী এলাকার ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিও ছিলেন। যদিও তিনি সেই মামলায় জামিনে রয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পরবর্তী প্রক্রিয়া:
পুলিশ জানিয়েছে, তাকে সোমবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এদিকে, শহরের রাজনৈতিক মহলে এ গ্রেপ্তার নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, দীর্ঘদিন এজাহারভুক্ত আসামি হয়েও তিনি কীভাবে প্রকাশ্যে কর্মরত ছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেনের গ্রেপ্তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তিনি স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় এবং ক্ষমতাসীন দলের ভেতর কোন্দলের শিকার হতে পারেন। একটি আন্দোলনের মামলায় তাকে টার্গেট করে প্রশাসনিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ উঠেছে সমর্থকদের পক্ষ থেকে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একজন এজাহারভুক্ত আসামি দীর্ঘদিন কিভাবে প্রকাশ্যে দায়িত্ব পালন করলেন, তা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি রয়েছে। এ গ্রেপ্তারের মাধ্যমে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্নও সামনে এসেছে, যা আগামী দিনে আরও আলোচনার জন্ম দিতে পারে।