ঢাকা : ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদের কর ফাঁকির ফাইল সম্পূর্ণ করে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতে সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতুর সঙ্গে এক কোটি টাকার ঘুষের চুক্তি হয়েছিল। এরই মধ্যে ৩৮ লাখ টাকা পরিশোধও করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ইউনিটের তদন্তে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় এনবিআরের আওতাধীন কর অঞ্চল-৫-এর কর্মকর্তা মিতুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে করদাতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ এবং তার আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

তদন্তে জানা গেছে, এক কোটি টাকার বিনিময়ে সালাহ উদ্দিনের ১২ করবর্ষের ফাইল সাজিয়ে ২৩৭ কোটি টাকার বেশি আয় করমুক্ত সেবা খাতে দেখানোর পরিকল্পনা ছিল। এই প্রক্রিয়ায় আইনজীবী নিজ চেম্বারে পুরোনো রিটার্ন পরিবর্তনও করেন।

দীর্ঘদিন ধরে কর ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন। আপিল, ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টেও তিনি নিজের পক্ষে রায় পাননি। পরে আয়কর আইনজীবীর মাধ্যমে সহকারী কর কমিশনার মিতুর সঙ্গে ঘুষের চুক্তি করেন।

এনবিআর সূত্র জানায়, আইনজীবীর চেম্বার থেকে সালাহ উদ্দিনের আয়কর সংক্রান্ত সব নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এতে ৭৫ কোটি টাকার কর ফাঁকির প্রমাণও মিলেছে। পাশাপাশি মিতুর মোবাইল ফোন থেকে ঘুষ চুক্তির ডকুমেন্ট ও লিখিত স্বীকারোক্তি পাওয়া গেছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মিতু ঘুষের বিনিময়ে করদাতার মনোনীত প্রতিনিধিকে সংবেদনশীল নথির বেশিরভাগ সরবরাহ করেছেন। এর মধ্যে পুরোনো রিটার্ন, অর্ডার শিট, কর নির্ধারণী আদেশ, আপিল ও ট্রাইব্যুনালের রেকর্ড ছিল।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে মিতুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।