আ.লীগের চরিত্র বদলায়নি : ডা. শফিকুর রহমান
সিলেট : জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হলেও তাদের চরিত্র বদলায়নি। বিদেশে বসে এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দেশকে যারা সম্মান করে না, তারা দেশে কার কাছে ভোট চাইবে কী করে। এমন আগ্রাসী রাজৈতিক দলকে দেশের মানুষ আর চায় না।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে সিলেট জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই দেশ ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল মানুষের। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভিন্নধর্মের নেতারা যে ধরনের ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন সে জন্য তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে প্রতিবেশী দেশ সংখ্যালঘু কার্ড খেলতে চেয়েছিল। আমরা বার বার বলেছি, এ দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরুর নামে আর কোনো বিভক্তি চাই না। এর প্রতিফলন গোটা বিশ্ববাসী দেখতে পেয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র বিভক্তির বদলে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করেছে।
তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র বিভক্তির বদলে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করেছে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে। জামায়াত কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেনি, কেবলই আল্লাহর কাছে মাথা নত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর অনেক ত্যাগ শিকার করেছি, আরও ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত। তবুও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাম্যের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের শীর্ষ ১১ নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে, কাউকে হত্যা করেছে। জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ফাঁসির রায় দিয়েছে। আল্লাহর ফয়সালায় তিনি জীবিত রয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার পেয়ে তিনি মুক্ত আকাশের নিচে ফিরবেন ইনশাআল্লাহ।
জামায়াত আমির বলেন, ২০০৬ সালে লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বর্বর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। দীর্ঘ ১৬ বছরে তারা ইতিহাসের বর্বর ও আগ্রাসী শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে গণধিকৃত একটি দলে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে জনগণ চায় কিনা সেটা শহীদ ও আহতদের এবং তাদের পরিবারকে জিজ্ঞেস করলেই বোঝা যাবে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি কখনো আনসার লীগ, কখনো রিকশালীগ, কখনো চাকরিলীগ, আবার কখনো ইসকনলীগ রূপে ফিরে এসে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছি। তারা শেষমেষ ধর্মীয় দাঙ্গার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণ ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষ আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম এমন বাংলাদেশ গড়ত চায় যেখানে নারী পুরুষের সম-অধিকার থাকবে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই জামায়াতে ইসলামের একমাত্র লক্ষ্য। সে জন্য দেশের জনগণের পূর্ণ সহযোগিতার দরকার। আর জনগণকে কাছে টানতেই ইতিবাচক রাজনীতি করছে জামায়াতে ইসলাম।
কেন্দ্রীয় জামায়াতের শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, সহকারী সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও মাওলানা মাশুক আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহছানুল মাহবুব জোবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।